উদ্ধব ঠাকরের ভোট-বার্তা একনাথ শিন্ডেকে। ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আইনি জয় না পেলেও শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণে নিজেদের জয়ই দেখছে শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) শিবির। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে সরকার ভেঙে নতুন করে ভোটে যাওয়ার আর্জি জানালেন উদ্ধব ঠাকরে। এর পাশাপাশি, দলত্যাগী বিধায়কদের পদ খারিজ করা নিয়ে স্পিকার কোনও সিদ্ধান্ত না নিলে আরও এক বার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বালাসাহেব-পুত্র।
শুক্রবার উদ্ধব সাবেক শিবসেনা ভেঙে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া শিন্ডেকে কটাক্ষ করে বলেন, “নতুন করে নির্বাচনে যাওয়া যাক। মানুষই শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন।” নিজের ইস্তফার প্রসঙ্গ তুলে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নৈতিকতার খাতিরে আমি পদত্যাগ করেছিলাম। একই ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর (শিন্ডে)-ও পদত্যাগ করা উচিত। সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল দলত্যাগী বিধায়কদের পদ খারিজ হবে কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিধানসভার স্পিকারই। এই প্রসঙ্গে উদ্ধব বলেন, “যদি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে স্পিকার এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না নেন, তবে আরও এক বার আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব।” একই সঙ্গে উদ্ধব জানান, তিনি আশা করছেন স্পিকার দ্রুত তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।
বৃহস্পতিবার দলত্যাগ বিরোধী আইনে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে-সহ ১৬ জন ‘বিদ্রোহী’ শিবসেনা বিধায়কের পদ খারিজ করেনি সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে শিবসেনার দখল পাওয়ার পরে শিন্ডে গোষ্ঠীর ‘চিফ হুইপ’ উদ্ধব ঠাকরের অনুগামী বিধায়কদের যে ‘নির্দেশ’ দিয়েছিলেন, বুধবার তাকেও ‘অসাংবিধানিক’ বলে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ।
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, গত জুনে শিন্ডে গোষ্ঠীর বিদ্রোহের সময় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার (তথা ভারপ্রাপ্ত স্পিকার) নরহরি সীতারাম জিরওয়াল দলত্যাগী বিধায়কদের অবস্থান স্পষ্ট করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা তাঁর এক্তিয়ার-বহির্ভূত।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে উদ্ধবকে পুনর্বহালের আর্জি বৃহস্পতিবার সরাসরি খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। সাংবিধানিক বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘বিধানসভায় আস্থা ভোটের আগে উদ্ধব নিজেই ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে আবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ফেরানো সম্ভব নয়।’’ উদ্ধবের ইস্তফার পরে রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি মহারাষ্ট্র বিধানসভার বৃহত্তম দল বিজেপির সমর্থিত শিন্ডেকে সরকার গড়তে ডেকে ‘অযৌক্তিক কিছু করেননি’ বলে জানায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কিন্তু শিন্ডেদের বিদ্রোহের পরেই উদ্ধবকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের নির্দেশ দেওয়ায় রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা করে শীর্ষ আদালত। এ প্রসঙ্গে আগে প্রশ্ন তুলে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, “ধরা যাক কোনও বিষয়ে একটি দলের অন্দরে মতবিরোধ হল। তখন কি সেই দলের নেতাকে (এ ক্ষেত্রে উদ্ধব) আস্থাভোট নেওয়ার কথা বলবেন রাজ্যপাল?”