সুপ্রিম-রায়ে ‘ক্ষমতা’ পেয়েই আমলাকে সরালেন কেজরীওয়াল। ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে দিল্লি সরকারের ক্ষমতা এবং এক্তিয়ার সম্পর্কিত রায় ঘোষণার ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। তার আগেই বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লি প্রশাসনের এক শীর্ষ আমলাকে সরিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। শুধু তা-ই নয়, সরকারের কাজে যে সব আমলা বাধা দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন আপ প্রধান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লির কর্মচারী বিভাগের সচিব আশিস মোড়েকে সরিয়ে দেয় কেজরীওয়াল প্রশাসন। সুপ্রিম-রায় ঘোষণা হওয়ার পরেই একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে কেজরীওয়াল বলেন, “এত দিন আমরা কর্মচারী এবং আমলাদের কাজে নজরদারি চালাতে পারতাম না। এ বার থেকে যে সমস্ত আধিকারিক নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।” আপের তরফেও একটি টুইট করে বলা হয়, “নির্বাচিত সরকারের আধিকারিকদের অন্যত্র বদলি করার ক্ষমতা রয়েছে। সরকারি আধিকারিকেরা কেবল নির্বাচিত সরকারের অধীনেই কাজ করবেন।”
দিল্লিতে ক্ষমতার রাশ কার হাতে থাকবে, কেন্দ্র না আপ সরকারের হাতে, বৃহস্পতিবার এই বিবাদের নিষ্পত্তি ঘটে সর্বোচ্চ আদালতে। দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মত ভাবে তাদের সিদ্ধান্ত জানায়। আদালতের তরফে জানানো হয়, ‘জনগণের ইচ্ছা’কে বাস্তবায়িত করার জন্যই নির্বাচিত করা হয় একটা সরকারকে। তাই প্রশাসনিক সমস্ত কাজেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। পক্ষান্তরে সরকারের নির্দেশ মেনে চলবেন উপরাজ্যপাল। প্রধান বিচারপতি রায়টি পড়ে শোনানোর সময় বলেন, “যদি আধিকারিকেরা মন্ত্রীদের কাছে তাঁদের কাজের ব্যাখ্যা না দেন, তবে তো যৌথ দায়িত্বের যে নীতি, তা-ই লঙ্ঘিত হবে।” তবে প্রয়োজনে উপরাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভাকে পরামর্শ দিতে পারেন বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
দিল্লি যে অন্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির তুলনায় আলাদা, সে কথা উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, আধিকারিক বদল সংক্রান্ত যাবতীয় ক্ষমতা থাকবে দিল্লি সরকারের হাতেই। ক্ষমতার রাশ নির্বাচিত সরকারের হাতে থাকবে, না কি উপরাজ্যপালের মাধ্যমে শেষ কথা বলবে কেন্দ্র, তা নিয়ে বিতর্ক বহু দিনের। অন্য রাজ্য সরকারগুলি সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পেলেও, দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় এই নিয়ম প্রযোজ্য হয় না। সাম্প্রতিক কালে দিল্লির আপ সরকারের সঙ্গে উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনার একাধিক বিষয়ে মতান্তর হয়েছে। উপরাজ্যপালের মাধ্যমে সরকারের কাজে নাক গলানোর অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। গত ১৮ জানুয়ারি এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট রায়দান স্থগিত রেখেছিল। সে সময় প্রায় সাড়ে চার দিন ধরে সওয়াল-জবাব পর্ব চলে।