বিতর্কের জেরে সংসদ-ক্যান্টিনে উঠে গেল ভর্তুকি

এত দিন বাজার দরের থেকে অনেক কমে লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যরা সংসদের ক্যান্টিনে খাবার পেতেন। তা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৮
Share:

সংসদের ক্যান্টিনের পুরনো দামের তালিকা।

পকেটে ৩৫ টাকা থাকলে ভরপেট নিরামিষ থালি পাওয়া যেত এত দিন। ৬৫ টাকায় চিকেন বিরিয়ানি। তেত্রিশ টাকায় চিকেন-ভাত।

Advertisement

সংসদের আগামী অধিবেশন থেকে সেই সুখের দিন শেষ। এত দিন বাজার দরের থেকে অনেক কমে লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যরা সংসদের ক্যান্টিনে খাবার পেতেন। তা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। আজ সংসদের বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে ওই ক্যান্টিন থেকে ভর্তুকি তুলে দেওয়া সংক্রান্ত স্পিকারের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন সব নেতা। এই সিদ্ধান্তের ফলে বছরে ১৭ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। জানা গিয়েছে, সব খাবারের দামই অন্তত দেড় গুণ বাড়বে।

২০১৫ সালে তথ্যের অধিকার আইনে করা একটি প্রশ্নের জবাবে জানা গিয়েছিল, সংসদের চারটি ক্যান্টিনে ভর্তুকি দিতে ২০১৩-২০১৪ আর্থিক বছরে ১৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। বাইরের তুলনায় ৮০ শতাংশ কম দামে খাবার বিক্রির খবর প্রকাশিত হওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়। তৎকালীন বিজেডি সাংসদ (এখন বিজেপিতে) জয় পণ্ডা লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে বলেন, সরকার যখন মানুষকে স্বেচ্ছায় রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ছেড়ে দিতে বলছে, তখন সাংসদদেরও উচিত ক্যান্টিনের খাবারে ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়া। গত এপ্রিলেই ওই ক্যান্টিনে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভাত, রুটি, রাজমা, সার্সো কা সাগ, আলুর তরকারি আর দই খেয়ে তাঁকে গুনতে হয়েছিল ২৯ টাকা। বাজার দরের তুলনায় ক্যান্টিনে যে জলের দরে খাবার পাওয়া যেত— এই একটি তথ্যেই তা স্পষ্ট।

Advertisement

সংসদের ক্যান্টিনে খাবারের দাম নিয়ে বহু বারই সংবাদমাধ্যমে সমালোচনা হয়েছে। সেটা মাথায় রেখেই ক্যান্টিন কমিটিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন স্পিকার ওম বিড়লা। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত। শুধু এ বার নয়, এর পরেও সময়ে সময়ে প্রয়োজন মতো দাম নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দিনের বেলায় কম পরিমাণ খাবারের পদ রান্না করা হবে যাতে খাবার নষ্ট না হয় এবং খরচ বাঁচে। ক্যান্টিনের কর্মীদের উপরে কাজের চাপ কমাতে আরও চা-কফির মেশিন বসানো হবে।

শুধু সাংসদ বা সংসদ কর্মীরাই নন, সাংবাদিক ও বৈধ অনুমতি নিয়ে সংসদে যাওয়া লোকেরাও এই ক্যান্টিনে কম দামে খাবার পেয়ে থাকেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁরাও এই ভর্তুকি থেকে বঞ্চিত হবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন শুধুমাত্র সাংসদের খাবারেরই দাম বাড়ছে। অধীর চৌধুরী থেকে বিজেপির রাজীব প্রতাপ রুডি, বিভিন্ন দলের সাংসদেরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন। এই সিদ্ধান্ত যে তাঁদের প্রস্তাবের ভিত্তিতেই হয়েছে, এমন কথাও বলতে শোনা যাচ্ছে অনেক সাংসদকে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement