বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল ছবি।
বেজিং থেকে ফিরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানালেন, তিস্তা প্রকল্প ভারত করুক এটাই চান তিনি। তবে সেই সঙ্গে জানাতে ভুললেন না, চিনের তরফ থেকেও যথেষ্ট আগ্রহ নিয়ে তিস্তা প্রকল্পে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে ভারতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলার পাশাপাশি খুব আলতো ভাবে হলেও চিনের তাসটি খেলেছেন হাসিনা। তাঁর কথায়, “তিস্তা প্রকল্প আমাদের করতে হবে। এ নিয়ে চিন-ভারত দুই দেশই আমাদেরকে প্রস্তাব দিয়েছিল। এরই মধ্যে চিন সমীক্ষা করেছে। ভারতও সমীক্ষা করবে। দু’দেশের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে আমাদের জন্য যেটা যুক্তিযুক্ত হবে, আমরা সেটাই নেব।” এর পরেই তিনি বলেন, “তবে আমি এখানে বেশি প্রাধান্য দেব যে, এটা ভারত করুক। কারণ তিস্তার পানিটা ভারত আটকে রেখেছে। তাদের কাছ থেকে যদি আদায় করতে হয়, তা হলে এই প্রকল্পের কাজ তাদেরই করা উচিত। তারা প্রজেক্ট করে যখন যা প্রয়োজন দেবে। এটাই তো কূটনীতি। এর মধ্যে কোনও রাগারাগির ব্যাপার নেই।”
গত মাসে হাসিনার নয়াদিল্লি সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পরে মোট দশটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে। তবে কূটনৈতিক সূত্রের মতে, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সবচেয়ে বড় দিকটি হল তিস্তা সংক্রান্ত পদক্ষেপ। স্থির হয়েছে, বাংলাদেশের দিকের তিস্তার জলের সংরক্ষণ এবং পরিচালন পদ্ধতির উন্নয়নের জন্য খুব শীঘ্রই একটি টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ যাবে।
ঘটনা হল, তিস্তা মহাপ্রকল্প থেকে ভারতকে হটিয়ে নিজেরা অর্থ লগ্নি করতে চায় চিন। তিস্তা জলবণ্টন চুক্তিটি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তিতে বাস্তবায়িত হতে পারছে না। কিন্তু শুখা মরসুমে বাংলাদেশের দিকের তিস্তায় জলের সরবরাহ বজায় রাখার জন্য জল ধারণ ও নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহের একটি মহাপ্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে ঢাকার, যার জন্য প্রযুক্তি এবং অর্থ— দু’টিই তাদের প্রয়োজন।
তিস্তা প্রকল্পের ক্ষেত্রে ভারতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, এ কথা ঘোষণার পাশাপাশি হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের দক্ষিণে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য চিনকে আহ্বান করা হয়েছে। তারা পরিকাঠামো ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগ করবে। আপাতত বাংলাদেশ-চিন মৈত্রী সেতু তৈরি করবে বেজিং।