হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিংহ সাইনি। ছবি: পিটিআই।
শপথ নেওয়ার দু’মাসের মধ্যেই তিন নির্দল বিধায়কের সমর্থন প্রত্যাহারের জেরে সঙ্কটে হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিংহ সাইনি। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি দাবি করলেন, ওই ঘটনার আদৌ কোনও প্রভাব তাঁর সরকারের উপর পড়বে না।
সাইনি মঙ্গলবার বলেন, ‘‘উদ্বেগের কিছু নেই। আমি আগেই জানতাম, কংগ্রেস তাদের স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করছে, কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হবে না।’’ অন্য দিকে হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার দাবি, বিধানসভায় গরিষ্ঠতা হারিয়েছে সাইনির সরকার। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির আর ক্ষমতায় থাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই।’’
মঙ্গলবার বিকেলে রোহতকে হুডার উপস্থিতিতে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সাইনি সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের পাশে থাকার ঘোষণা করেন নির্দল বিধায়ক রণধীন গোলান (পান্ডুরি), ধর্মপাল গোন্ডার (নিলোখেরি) এবং সোমবীর সিংহ সঙ্গওয়ান (দাদরি)। সঙ্গওয়ান বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে বাদশাপুরের নির্দল বিধায়ক রাকেশ দৌলতাবাদও রয়েছেন। তিনি রাস্তায় আটকে পড়ায় সময় মতো এখানে পৌঁছতে পারেননি।’’ আগামী ২৫ মে ষষ্ঠ দফায় সে রাজ্যের ১০টি লোকসভা আসনের সবগুলিতে ভোটগ্রহণ হবে। তার আগে এই ঘটনায় বিজেপি চাপে পড়ল বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।
অন্য দিকে পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসাব বলছে, নির্দল বিধায়কদের সমর্থন প্রত্যাহারের ফলে হরিয়ানার সংখ্যালঘু বিজেপি সরকার অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়তে পারে। ৯০ সদস্যের হরিয়ানা বিধানসভায় গরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৪৬ জন বিধায়কের সমর্থন। বর্তমানে দু’টি আসন খালি থাকায় সেই জাদুসংখ্যা হয়েছে ৪৫। স্পিকার-সহ বিজেপির রয়েছে ৪০ জন বিধায়ক। পাশাপাশি, হরিয়ানা লোকহিত পার্টির গোপাল কান্ডাও সাইনি সরকারকে সমর্থন জানাচ্ছেন।
হিসাব বলছে, ছ’জন নির্দলের মধ্যে চার জন সমর্থন তুলে নিলে গরিষ্ঠতার জাদুসংখ্যা ছুঁতে পারবেন না সাইনি। বিরোধী শিবিরে কংগ্রেসে ৩০, জেজেপি ১০ এবং আইএনএলডি ১ জন বিধায়ক রয়েছেন। তিন-চার জন নির্দলকে পেলে বিধানসভায় পাশ হয়ে যেতে পারে অনাস্থা প্রস্তাব। ঘটনাচক্রে, গত মার্চ মাসেই উপমুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপি সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন ১০ বিধায়কের দল জেজেপি (জননায়ক জনতা পার্টি)-র প্রধান দুষ্মন্ত চৌটালা। তাঁর দল এ বার আলাদা ভাবে লোকসভা ভোটেও লড়ছে।