বাঁ দিক থেকে সাংসদ মহুয়া মৈত্র, গৌতম আদানি। — ফাইল চিত্র।
অবশেষে মুখ খুলল আদানি গোষ্ঠী। বিবৃতি দিয়ে জানাল, কয়েক জন ব্যক্তি এবং কিছু গোষ্ঠী তাদের ‘নাম, সুখ্যাতি এবং বাজারের অবস্থান’ নষ্ট করার জন্য ‘অনেকে বাড়তি কাজ করছেন’। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রসঙ্গে এ কথা জানিয়েছে আদানি গোষ্ঠী।
অভিযোগ উঠেছে, হিরানন্দানি সংস্থার সিইও দর্শন হিরানন্দানির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সংসদে গৌতম আদানি এবং তাঁর সংস্থাকে নিশানা করে বক্তৃতা করেছেন মহুয়া। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়অনন্ত দেহাদ্রাই হলফনামার আকারে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, হিরানন্দানির থেকে ‘ঘুষ এবং বিশেষ সুবিধা’ নিয়ে মহুয়া সংসদে আদানি গোষ্ঠীকে নিশানা করে বক্তৃতা করেছেন। মহুয়া জানিয়েছেন, যে কোনও রকমের তদন্তের জন্য তিনি প্রস্তুত।
অভিযোগ খারিজ করেছে হিরানন্দানি গোষ্ঠী। জানিয়েছে, পুরো অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাদের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা রাজনীতির ব্যবসা করি না। আমাদের সংস্থা বরাবর দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে কাজ করে। আগামী দিনেও করবে।’’ এর পরেই আদানি গোষ্ঠীর তরফে সোমবার বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, ‘‘রবিবার, ১৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই হলফনামার আকারে সিবিআইয়ের কাছে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং হিরানন্দানি গোষ্ঠীর সিইও দর্শন হিরানন্দানি ষড়যন্ত্র করে সংসদে প্রশ্ন করে আদানি গোষ্ঠীকে নিশানা করছেন।’’
আদানি গোষ্ঠী আরও জানিয়েছে, হিরানন্দানি গোষ্ঠীর থেকে ‘ঘুষ এবং সুবিধা’ নিয়েছেন মহুয়া। অন্য এক সাংসদও এ নিয়ে স্পিকারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। এই দুর্নীতির তদন্ত করে মহুয়াকে সাসপেন্ডের দাবিও তুলেছেন তিনি। এই অভিযোগ এখন প্রকাশ্যে এসেছে। সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। প্রসঙ্গত, রবিবার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে সাসপেন্ড করার দাবি জানিয়েছেন মহুয়াকে। এ নিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠিও দিয়েছেন।
আদানি গোষ্ঠীর মুখপাত্র আরও বলেন, ‘‘৯ অক্টোবর আমরা জানিয়েছিলাম, কিছু গোষ্ঠী এবং ব্যক্তি আমাদের নাম, সুখ্যাতি, বাজারে অবস্থান নষ্টের জন্য অনেকে বাড়তি কাজ করছেন। সেই বক্তব্যকেই সমর্থন করে সাম্প্রতিক এই ঘটনা। আইনজীবীর অভিযোগ থেকে স্পষ্ট, ২০১৮ সাল থেকেই আদানি গোষ্ঠী এবং আমাদের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির নাম খারাপের চেষ্টা চলছে।’’ ওই গোষ্ঠী এ-ও জানিয়েছে, ৯ অক্টোবরও সমাজমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে মানুষকে জানানোর চেষ্টা করেছিল তারা যে, ওসিসিআরপি-সহ কিছু বিদেশি সংস্থা বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সহায়তায় আদানি গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে চলেছে। সংস্থার বাজারদরের পতন ঘটানোই লক্ষ্য। বিদেশে এবং ভারতে একই সঙ্গে এই চেষ্টা চলছে। আদানি গোষ্ঠীর আরও অভিযোগ, আদালতে যে দিন তাদের কোনও মামলার শুনানি থাকে, তার আগে সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়, যাতে তাদের নাম খারাপ হয়। চলতি বছর ১২ অক্টোবর একটি সংবাদমাধ্যম আদানি গোষ্ঠীর দিকে আঙুল তুলে রিপোর্ট প্রকাশ করে। তার পরের দিনই সুপ্রিম কোর্টে সংস্থার একটি মামলার শুনানি ছিল। তাদের অংশীদারদের স্বার্থেই এই বিবৃতি বলেও জানিয়েছে সংস্থার।