অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
এত দিন বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বিরোধী নেতাদের সমর্থন চেয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। এ বার কেন্দ্রীয় অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স)-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নিজেদের খাসতালুক দিল্লিতে শক্তি প্রদর্শন করতে চলেছে আম আদমি পার্টি (আপ)। রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে মহা সমাবেশ করতে চলেছে তারা। আপের দাবি, এই সমাবেশে প্রায় এক লক্ষ মানুষের জমায়েত হতে চলেছে। রবিবার ছুটির দিন হলেও রাজধানীর বিস্তীর্ণ অংশ যানজটের আশঙ্কা করছে দিল্লি পুলিশ। আঁটসাঁট করা হয়েছে দিল্লির নিরাপত্তা ব্যবস্থাও।
আপের মুখপাত্র রীনা গুপ্ত জানিয়েছেন, তাঁদের আশা অন্তত এক লক্ষ মানুষ রবিবার রামলীলা ময়দানে আসবেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “আমরা এই সভার জন্য সর্বত্র প্রচার করেছি। সাধারণ মানুষকে এটা বোঝাতে পেরেছি যে, এই অর্ডিন্যান্স কার্যকর হলে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে কতটা প্রভাব পড়বে।” আপ সূত্রে খবর, দিল্লির আপ নেতাকর্মীরা তো বটেই, পঞ্জাব থেকেও বহু নেতাকর্মী ‘মহা সমাবেশে’ যোগ দেবেন। সভায় কেজরীওয়াল ছাড়াও বক্তব্য রাখতে পারেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, রাজ্যসভার সাংসদ রাঘব চাড্ডা। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সভাস্থলে ১২ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও নজরদারি চালানো হচ্ছে রামলীলা ময়দান সংলগ্ন এলাকায়।
এর আগে অর্ডিন্যান্স প্রসঙ্গে আপের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার, শরদ পওয়ার-সহ একাধিক বিরোধী নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেজরীওয়াল। কংগ্রেস বাদে প্রায় সব বিরোধী দলই এই বিষয়ে আপের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে। কংগ্রেস এখনও এই বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি।
গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু তারপরেই অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজ়েট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, ‘জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস’ কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধি সংখ্যা বেশি থাকায় আমলাদের বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁরাই কার্যত ‘নির্ণায়ক’ হবেন। ১২ মে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ আনেন কেজরীওয়াল। তার পর থেকে এই নিয়ে বিতর্ক চলছেই।