স্বাতী মালিওয়াল। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অতিশী মারলেনার নাম ঘোষণা করেছেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। আর দিল্লির ভাবী মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কেই আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে আম আদমি পার্টি (আপ)-র রাজ্যসভার সাংসদ স্বাতী মালিওয়ালের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলল কেজরীওয়ালের দল। আপের অভিযোগ, তাদের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে রাজ্যসভায় গিয়ে আসলে বিজেপির শেখানো বুলি আওড়াচ্ছেন মালিওয়াল।
দিল্লির আবগারি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেননি কেজরীওয়াল। তিনিই দেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি গ্রেফতার হওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরেই আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান কেজরীওয়াল ঘোষণা করেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। গত রবিবার দুপুরে দলীয় এক সম্মেলনে আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান জানিয়েছেন, দু’দিন পরেই মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেবেন তিনি। সঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, পুনরায় ভোটে না জেতা পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর পদে তিনি আর ফিরবেন না। মঙ্গলবার দলের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেজরী। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা চললেও আপ প্রধান উত্তরাধিকারী হিসাবে বেছে নেন অতিশীকে। উল্লেখ্য, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর অতিশীই এ বার দেশের দ্বিতীয় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন।
পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অতিশীর নাম ঘোষণা হওয়ার কিছু পরেই তাঁকে আক্রমণ শানান মালিওয়াল। অতিশীকে ‘পুতুল মুখ্যমন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আজ দিল্লির জন্য একটি দুঃখের দিন।” তার পরেই অতিশীর বাবা-মাকে আক্রমণ করে মালিওয়ালের সংযোজন, “আজ এমন একজন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হলেন, যাঁর পরিবার সন্ত্রাসবাদী আফজল গুরুর ফাঁসি আটকাতে দীর্ঘ লড়াই লড়েছিল। নতুন মুখ্যমন্ত্রীর বাবা-মা আফজল গুরুকে বাঁচাতে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন।”
মালিওয়ালের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই আপের তরফে দিলীপ পান্ডে বলেন, “যদি ওঁর ন্যূনতম লজ্জা থাকে, তবে মালিওয়াল রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিন। উনি বরং বিজেপির টিকিটে রাজ্যসভায় যান।’’
গত ১৩ মে কেজরীওয়ালের ঘনিষ্ঠ বৈভব কুমারের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ আনেন মালিওয়াল। অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে তাঁকে হেনস্থা করেছেন বৈভব। ১৮ মে বৈভবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মালিওয়াল দাবি করেছিলেন, গত ১৩ মে কেজরীওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ই তাঁকে নিগ্রহ করেন কেজরীর ব্যক্তিগত সচিব বৈভব। আপ সাংসদের দাবি, বৈভব তাঁকে ৭-৮টি চড় এবং পেটে লাথি মারেন। ১৬ মে দিল্লি পুলিশের কাছে বৈভবের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন মালিওয়াল। ঘটনার অব্যবহিত পরে আপ নেতারা বৈভবের আচরণের নিন্দা করে মালিওয়ালের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেই অবস্থান পরিবর্তন করে আপ শীর্ষ নেতৃত্ব স্বাতীর যাবতীয় অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দেন। মালিওয়ালের অভিযোগের নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তোলা হয়।