প্রতীকী ছবি।
এক কিলো, দু’কিলো নয়, প্রায় ১৮ কিলোগ্রাম। সম্প্রতি এমসে এক মহিলার ডিম্বাশয় থেকে ১৭.৮ কিলোগ্রামের টিউমার অস্ত্রোপচার করে বাদ দিলেন বাঙালি অঙ্কোলজিস্ট মুকুরদিপী রায়। টিউমারটি বাদ যাওয়ায় ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত স্টেজ-৪-এর ওই রোগী আপাতত বিপন্মুক্ত বলে দাবি করেছেন ওই চিকিৎসক।
ওই ওজনের টিউমার নিয়ে কী ভাবে ওই মহিলা চলাফেরা করে যাচ্ছিলেন, তা ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। মুকুরদিপীর মতে, ওই রোগী অন্তত ছয় থেকে আট মাস আগে জানতে পেরেছিলেন তাঁর ডিম্বাশয়ে ক্যানসার হয়েছে। অস্ত্রোপচার ছাড়া উপায় নেই জেনেও বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকেছিলেন তিনি। তাতে লাভ হয়নি। উল্টে টিউমার বাড়তে বাড়তে ওই আকার নেয়।
সম্প্রতি এমসে ভর্তি হওয়া ক্যানসারে আক্রান্তদের উপরে একটি সমীক্ষা চালান কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা গিয়েছে, অন্তত ৮৩ শতাংশ রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে অস্ত্রোপচারের ভয়ে শুরুতে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এড়িয়ে গিয়েছেন। মুকুরদিপী বলেন, ‘‘এঁরা প্রথমে হোমিয়োপ্যাথি বা আয়ুর্বেদ চিকিৎসা করিয়ে তার পরে আমাদের কাছে আসছেন। তত ক্ষণে ক্যানসার অনেকটাই ছড়িয়ে পড়ে। ফলে সাফল্যের সম্ভাবনা কমে যায়।’’ অথচ প্রথম দিকে ধরা পড়লে অন্তত ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ক্যানসার নিরাময় সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: হাতগাড়ি ঠেলে প্রৌঢ়কে নিয়ে হাসপাতালে পরিবার, চূড়ান্ত অমানবিকতার ছবি পুদুচেরিতে
মূলত দিল্লির এমসের ক্যানসার আক্রান্তদের একটা বড় অংশ বিহার ও উত্তরপ্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকার হওয়ায় সমস্যার মূলে জনসচেতনতার অভাব একটি বড় কারণ বলে মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তা না-হলে প্রথম দিকে ধরা পড়লে ক্যানসারের চিকিৎসায় সাফল্যের হার বেড়ে যায় বলে দাবি চিকিৎসকদের। মুকুরদিপী বলেন, ‘‘হোমিয়োপ্যাথি বা আয়ুর্বেদ সাহায্যকারী ওষুধ হিসেবে কাজ করতে পারে। কিন্তু তা কখনওই ক্যানসার নিরাময় করতে পারে না। অন্তত এখনও তা প্রমাণিত হয়নি।’’