বিতর্কের আবহেই আবার চিতা আসছে দেশে। ফাইল চিত্র।
ভারতে চিতা এসেছিল বিলুপ্ত হওয়ার ৭০ বছর পর গত সেপ্টেম্বরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে, ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার নামিবিয়া থেকে দেশে ৮টি চিতা আনিয়েছিল কেন্দ্র। ৫টি স্ত্রী এবং ৩টি পুরুষ চিতা— দেশে নতুন করে চিতার বংশ বিস্তার করবে— এই ছিল পরিকল্পনা। যদিও তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। সেই বিতর্কের আবহেই দেশে আরও বারোটি চিতা আনতে চলেছে মোদী সরকার।
সব ঠিক থাকলে চলতি জানুয়ারির মাঝামাঝি বা শেষ সপ্তাহেই নামিবিয়ার কুনো ন্যাশনাল পার্ক থেকে আরও ৭টি পুরুষ এবং ৫টি স্ত্রী চিতা এসে পৌঁছবে দেশে। আগামী ২০ জানুয়ারি কর্নাটকের বান্দিপুর ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রে তাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করবে কেন্দ্র। বান্দিপুরেই এ বার বসতে চলেছে জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের ২০তম বৈঠক। সেখানেই এই বারোটি চিতাকে প্রকাশ্যে আনা হবে। কেন্দ্রের পরিবেশ মন্ত্রকের একটি সূত্রের উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই এই খবর জানিয়েছে। ওই সূত্রেরই খবর, বারোটি চিতাকে গত ছ’মাস কুনো অভয়ারণ্যে আলাদা করে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে, ভারতে আনার জন্য।
দেশে চিতার বংশবিস্তার সংক্রান্ত পাঁচ বছরের প্রকল্পে দেশে অন্তত বারো থেকে চোদ্দোটি চিতা আনানোর পরিকল্পনা যে রয়েছে, তা আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্র। তবে কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, সব মিলিয়ে দেশে চিতার সংখ্যা বেড়ে হবে ২০টি। ভারতে ১৯৫২ সাল থেকে বিলুপ্ত চিতা। তাই দেশে চিতার বংশবিস্তারের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টা বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছিল। তবে একই সঙ্গে তৈরি হয়েছিল বিতর্কও। দেশের সাধারণ করদাতাদের অর্থ খরচ করে ১ কোটি ১০ লক্ষ ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৯০.৫ কোটি টাকার এই প্রকল্প কতটা জরুরি তা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠেছিলই। সম্প্রতি বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ তোলে সরকার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চিতা কেনার চুক্তিতে মোটা অঙ্কের বিনিময় মূল্য দিয়েছে। দেশের হাতির দাঁত সংক্রান্ত কড়াকড়ি শিথিল করেছে মোদী সরকার। বিরোধীরা এমনও প্রশ্ন তোলেন যে, ‘‘মোদীর চিতার জন্য কি দেশের হাতির প্রাণ যাবে?’’
তবে এই বিতর্কের মধ্যেই জানুয়ারিতে দেশে আরও বারোটি চিতা আনার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলল কেন্দ্র।