ছবি: পিটিআই।
প্রথম প্রথম বাচ্চাটির কান্না ভেসে আসছিল। ধীরে ধীরে তা ক্ষীণ হতে থাকে। এখন তা-ও শোনা যাচ্ছে না। তা সত্ত্বেও আশা ছাড়ছেন না উদ্ধারকারীরা। তামিলনাড়ুর ত্রিচি জেলায় যে পরিত্যক্ত কুয়োর পড়ে গিয়েছে তিন বছরের বাচ্চাটি, তার পাশেই প্রায় ১১০ ফুট গভীর একটি গর্ত খুঁড়তে শুরু করেছেন তাঁরা।
রবিবার ওই পরিত্যক্ত কুয়োর পাশেই গর্ত খোঁড়া শুরু করা হয়েছিল। ওএনজিসি-র একটি মেশিন সে কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এরই মাঝে বিপত্তি দেখা দেয়। যে গাড়়ি করে ওই মেশিনটি ঘটনাস্থলে আনা হচ্ছিল, তাতে ত্রুটি ধরা পড়ে। বেশ কিছু ক্ষণ উদ্ধারকাজ আটকে যায়। তবে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, সে ত্রুটি সারিয়ে ফের ওই গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু করেছেন তাঁরা।
উদ্ধারকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা আধিকারিক জে রাধাকৃষ্ণণ বলেন, “ওই কুয়োর পাশে একটি সমান্তরাল কুয়ো খোঁড়া হচ্ছে। ঘটনাস্থলে রয়েছেন এল অ্যান্ড টি, ওএনজিসি এবং নেভেলি লিগনাইট কর্পোরেশন-এর আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ দল। উদ্ধারকাজে যাতে কোনও রকম বাধাবিঘ্ন না ঘটে, তার লক্ষ্য রাখার নির্দেশে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।”
আরও পড়ুন: অস্ত্র ফেলে দেওয়ার পরও যুবককে পাঁচটি গুলি ক্যালিফোর্নিয়ার পুলিশের, মিলল প্রশংসাও
শুক্রবার সন্ধ্যায় ত্রিচির নাডুকাট্টুপাত্তিতে একটি ৬০০ ফুট গভীর পরিত্যক্ত কুয়োয় পড়ে যায় তিন বছরের সুজিত উইলসন। সুজিতের উদ্ধারকাজে নামে রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, প্রথম দিকে সুজিত ৩৫ ফুট নীচে আটকে যায়। ধীরে ধীরে কুয়োর আরও গভীরে পিছলে যেতে থাকে সে। এ মুহূর্তে প্রায় ১০০ ফুট গভীরে আটকে রয়েছে সুজিত। তাকে অক্সিজেন ক্রমাগত জোগানোরও কাজ করে চলেছেন উদ্ধারকারীরা।
আরও পড়ুন: হাতে বিপুল অর্থ, তবু খেটেখুটে সংসার টানতে হয় তরুণীকে, কেন জানেন?
ওই ঘটনার দু’দিন কেটে গেলেও এখনও সুজিতকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গোটা তামিলনাড়ু জুড়ে তার জন্য প্রার্থনা চলছে। এ দিন বিকেলে সুজিতের ফিরে আসার কামনা করে টুইট করেন রাহুল গাঁধী। টুইটারে সুজিতকে সুরজিত্ নামে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘গোটা দেশ যখন দীপাবলি পালনে ব্যস্ত, সে সময় তামিলনাড়ুতে সময়ের বিপরীতে গিয়ে বেবি সুরজিতকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে, যে গত শুক্রবার কুয়োয় আটক রয়েছে। প্রার্থনা করি, শীঘ্রই তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এবং তার মা-বাবার কাছে ফিরে আসবে সে।’ সুজিতের হয়ে প্রার্থনা করেছেন কমলহাসন, রজনীকান্ত-সহ বহু বিশিষ্টরা।