ধৃত সেই মুখোশধারী ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে কৃষকরা।—ছবি টুইটার।
দিল্লির সিংঘু সীমানা থেকে মুখোশধারী এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে পাকড়াও করলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে।
আন্দোলনকারী কৃষকদের দাবি, ধরা পড়া ওই ব্যক্তি জেরায় তাঁদের কাছে স্বীকার করেছেন ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে কৃষকদের র্যালি বানচাল করতে দু’টি দলকে কাজে লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি, চার কৃষক নেতাকে গুলি করার সুপারি-ও দেওয়া হয়েছে।
রাতেই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সিংঘুতে আন্দোলনরত কৃষকরা ওই ব্যক্তিকে সামনে নিয়ে আসেন। সেখানে তাঁরা দাবি করেন, ধরা পড়া এই ব্যক্তি তাঁদের কাছে বেশ কয়েক জন পুলিশ আধিকারিকের নাম জানিয়েছেন। যাঁরা কিনা ২৬ জানুয়ারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে কৃষক নেতাদের গুলি করার পরিকল্পনা করেছেন।
সাংবাদিকদের সামনে ওই ব্যক্তি দাবি করেন, “আমাদের দুটো দল রয়েছে। ১৯ জানুয়ারি থেকে আমি এখানে রয়েছি। আন্দোলনকারীদের কাছে কোনও অস্ত্র আছে কিনা তা খুঁজে বার করতে বলা হয়েছে আমাদের।” তাঁর আরও দাবি, “২৬ জানুয়ারির দিন আমাদের একটি দল আন্দোলনকারী কৃষকদের ভিড়ে মিশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। যদি কৃষকরা প্যারেড করে এগিয়ে যান, তা হলে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মুখোশধারী এই ব্যক্তির দাবিকে ঘিরে সিংঘু সীমানায় পরিস্থিতি বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে। কৃষক সংগঠন এবং সরকারের মধ্যে টানাপড়েনের আবহে এমন একটা ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও ধরা পড়া ব্যক্তিটি কে, আদৌ তিনি ঠিক বলছেন কি না তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন কৃষকরা। কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত বলেন, “আমাদের আন্দোলনকে কারা বানচাল করতে চায় তা তদন্ত করা প্রয়োজন। প্রত্যেকেই জানেন আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। ধৃত ব্যক্তি জানিয়েছেন, টাকার জন্য কাজ করেন। আমাদের জানা দরকার কারা এই ব্যক্তিদের অর্থ জোগাচ্ছে।”
কৃষি আইন নিয়ে সরকার এবং কৃষকদের মধ্যে ‘দড়ি টানাটানি’ চলছেই। দফায় দফায় বৈঠকেও কোনও সামধানসূত্র মেলেনি এখনও। তার মধ্যে ২৬ জানুয়ারি দিল্লির বুকে কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালির হুঁশিয়ারি নিয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে কোনও ভাবেই এই র্যালির অনুমতি দেওয়া যাবে না। কৃষকরাও অনড়। ফলে ওই দিন কী পরিস্থিতি দাঁড়ায় সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ।