অরুণাচলে মিয়াও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক স্বাস্থ্যকর্মী। নিজস্ব চিত্র
মাস্কে তবু চোখ-কান, কপাল, মাথার উপরটা দেখা যায়। পিপিই-তে তো সবটাই ঢাকা! সামনে কে দাঁড়িয়ে, পাশে কে বসে, রোগীর সামনে কে, কাকে ডাকতে হবে- কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। সামনে দাঁড়ানো মানুষকে বারবার জিজ্ঞাসা করে জানতে হচ্ছে, আপনি কি অমুকবাবু বা তমুকদিদি? রোগীরও ডাক্তার-নার্সদের আসল চেহারা দেখতে পাচ্ছেন না। এর প্রভাব পড়ছে চিকিৎসায়। এই সমস্যাটা এখন বিশ্ব জুড়েই। মানুষের মুখকে ফের সামনে এনে এর সমাধান করে দিয়েছেন অরুণাচলপ্রদেশে চাংলাং জেলার জেলাশাসক দেবাংশ। তাঁর নির্দেশ, জেলার হাসপাতালগুলিতে বা অন্যত্র সকলকে পিপিই কিটের সামনে নিজের ছবি ও নাম লিখে এ-ফোর মাপের কাগজ সেঁটে বা ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
অরুণাচল প্রদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯১। তার মধ্যে চাংলাং জেলাতেই ৫৫ জন। তাই পিপিই পরা ব্যক্তিও তুলনায় বেশি। পাইলট প্রকল্প হিসেবে মিয়াও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে সাফাইকর্মী সকলকেই পিপিই কিটের সামনে নাম ও ছবি লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গত ১০ দিনে মিয়াওয়ে এই পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। এর পর বরদুমসা ও ডিয়ুনের স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও এই নিয়ম চালু হবে। মিয়াওয়ে রোগী থেকে চিকিৎসাকর্মী সকলেই খুশি এতে। অনেকে বলছেন, গোটা দেশেই তো এটাকে মডেল করা যেতে পারে!
তবে নিজেকে কৃতিত্ব দিতে নারাজ জেলাশাসক দেবাংশ। তিনি নিজেও এমস থেকে পাশ করা ডাক্তার। ঘুরছেন হাসপাতালগুলিতে। তাঁর কথায়, “ভাবনাটা এসেছে মার্কিন মুলুক থেকে। আপনাকে প্রতিদিন আপাদমস্তক ঢাকা কয়েক জন দেখতে আসছেন। প্রশ্ন করছেন। আপনি জবাব দিচ্ছেন। কিন্তু চেহারা কেমন জানতে পারছেন না। এতে রোগীদের খুবই সমস্যা হয়। প্রবাসী বন্ধুর থেকে জানতে পারি, একই সমস্যা নিউ ইয়র্কেও হয়েছিল। সেখানে পোশাকধারীর নাম ও ছবি সামনে লাগানোর ব্যবস্থা হয়। সিদ্ধান্ত নিই, চাংলাংয়েও সেই রাস্তায় হাঁটব।”