Tirumala Tirupati Devasthanams

দু’মাসেই তিরুপতি মন্দিরের ৭৪৩ কর্মী করোনা আক্রান্ত, মৃত ৩

অর্থ উপার্জনের জন্যই মন্দির খুলে দেওয়া হয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ তুললেও তা উড়িয়ে দিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তিরুপতি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ১৭:২৬
Share:

করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগে এমনই ভিড় হত তিরুপতি মন্দিরে। এখন কিছুটা কমলেও সামাজিক দূরত্ব বিধি কতটা মানা হচ্ছে, তা নিয়ে সংশয়ে অনেকেই।

যে কোনও বিপদে, সঙ্কটে রক্ষা করবেন, এই বিশ্বাস নিয়ে লাখ লাখ মানুষ ছুটে যান এখানে। কিন্তু করোনাভাইরাসের থাবা থেকে রক্ষা পেল না সেই তিরুপতি মন্দিরও। গত দু’মাসে তিরুমালা-তিরুপতি দেবস্থানমের (টিটিডি) প্রায় সাড়ে সাতশো কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানালেন কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্যই অবিবেচকের মতো মন্দির খুলে দেওয়া হয়েছিল বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই সরব হয়েছিলেন। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে টিটিডি-র চিফ এগজিকিউটিভ অনিলকুমার সিংহল জানিয়েছেন, তিরুপতি মন্দিরে শুধু নয়, গোটা অন্ধ্রপ্রদেশেই সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে।

Advertisement

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শৄঙ্খল ভাঙতে দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হয়েছিল ২৫ মার্চ। বন্ধ হয়েছিল তিরপতির এই মন্দিরের দরজাও। প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর গত ১১ জুন ফের দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয় মন্দির। তার পর থেকেই সংক্রমণ শুরু হয় মন্দিরের কর্মীদের মধ্যে। দর্শন চালুর পাশাপাশি ‘ডায়াল ইওর এগজিকিউটিভ অফিসার’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করেছিল মন্দির কর্তৄপক্ষ। নির্দিষ্ট নম্বরে ডায়াল করে টিটিডি-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন ভক্তরা। সেই রকম একটি কথোপকথনের সময়েই এই তথ্য উঠে এসেছে।

অনিলকুমার সিংহল জানিয়েছেন, ১১ জুন মন্দির খোলার পর থেকে এখনও পর্য়ন্ত মোট ৭৪৩ জন কর্মীর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাঁদের মধ্যে অবশ্য ৪০২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ৩৩৮ জনের চিকিৎসা চলছে টিটিডির তিনটি রেস্ট হাউস শ্রীনিবাসম, বিষ্ণুনিবাসম এবং মাধবম-এ। এই তিনটি রেস্ট হাউসকেই কোভিড সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে তিন জনের মৄত্যু হয়েছে। অনিলকুমার সিংহল বলেছেন, ‘‘ভাইরাস সংক্রমণে তিন জন কর্মীর মৄত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের জন্য করোনা কেন্দ্রে সম্ভাব্য সবচেয়ে ভাল ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মন্দা আরও গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী হবে, মোকাবিলায় তিন দাওয়াই মনমোহনের

অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতিতে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এই মন্দিরে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হয়। লকডাউনের পর জুন মাসে মন্দির খোলার সময়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে। ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। বাস্তবেও কার্যত তাই হয়। মন্দিরের দরজা খোলার পর থেকেই আক্রান্ত হতে থাকেন কর্মী-পুরোহিতরা। যদিও সিইও দাবি করেছেন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কোভিড গাইডলাইন মেনেই খোলা হয়েছিল মন্দির এবং ব্যবস্থাপনাও সেই ভাবেই করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশ, দেশে মোট আক্রান্ত ২২ লক্ষ ছাড়াল

আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পর আবার মন্দিরের উদ্দেশ্য নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও সরব হয়েছিলেন অনেকে। এ নিয়ে অনিলকুমার সিংহলের বক্তব্য, ‘‘প্রথম দিকে (মন্দির খোলার পর) টিটিডি কর্তৄপক্ষের ভূমিকার তারিফ করেছিলেন সবাই। কিন্তু যেই কর্মী-পুরোহিতরা সংক্রমিত হতে শুরু করলেন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং সমাজের এক শ্রেণির মানুষ আমাদের দোষারোপ করতে শুরু করলেন। শুধুমাত্র টাকা রোজগারের উদ্দেশ্যেই আমরা ‘দর্শন’ চালু করেছি, এমন অভিযোগও করেছেন অনেকে। কিন্তু আমরা দর্শনার্থীদের থেকে যা আয় করছি, তার চেয়ে অনেক বেশি খরচ করছি কোভিডের মোকাবিলায়।’’ তাঁর আরও যুক্তি, ‘‘শুধু টিটিডি-তে নয়, গোটা রাজ্য এবং পুরো দেশও একই সমস্যায় ভুগছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement