লোকসভা। শুক্রবার।
বিরোধীদের বিক্ষোভের জেরে কার্যত অচল সংসদের বাদল অধিবেশন। পেগাসাস, নয়া কৃষি আইনের মতো বিষয় নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবিতে শুরু থেকেই বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছে বিরোধীরা। তাদের আরও দাবি, সংসদে কথাই বলতে দেওয়া হচ্ছে না বিরোধী সাংসদদের। সেই আবহে গত শুক্রবার ৪৫ মিনিটের অধিবেশন-পর্বে বিরোধীদের প্রতিবাদের দৃশ্য অধিবেশন কক্ষের স্ক্রিনে দেখানো হলেও বাইরে জগতের জন্য তা মোট ৭২ সেকেন্ড সম্প্রচার করা হয়েছে লোকসভা টিভিতে। এই একই অভিযোগ কিছু দিন আগে রাজ্যসভা টিভির বিরুদ্ধেও তুলেছিল বিরোধীরা।
শুক্রবার মোট দু’দফায় চলেছিল লোকসভার অধিবেশন। প্রথম দফা চলেছিল সকাল ১১টা থেকে ১১টা ২১ মিনিট পর্যন্ত। সেই সময়ে হিরোসিমা, নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা-বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং অলিম্পিক্স পদক-জয়ী রবিকুমার দাহিয়াকে অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। তখন অবশ্য বিরোধীদের বিক্ষোভ শুরু হয়নি। নিজেদের আসনেই বসেছিলেন কংগ্রেস, ডিএমকে, বাম এবং তৃণমূল সাংসদরা। দুপুরের পর লোকসভায় কেন্দ্র দু’টি বিল পেশ করতেই ফের উত্তাল হয়ে ওঠে নিম্নকক্ষ। বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে নিজেদের আসন ছেড়ে স্পিকারের কাছে ওয়েলে নেমে আসেন বিরোধী সাংসদরা। ওই সময়ে কক্ষের ভিতর বিরোধীরা কী ভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তার কিছুই সম্প্রচার করা হয়নি লোকসভা টিভিতে, এমনই অভিযোগ উঠল।
লোকসভা টিভির সূত্রের দাবি, কক্ষের ভিতরের স্ক্রিনে যা দেখানো হয়, তা সিসিটিভি ব্যবস্থারই অংশ। লোকসভা টিভির কাছে আসা ভি়ডিয়ো ফুটেজের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে চ্যানেলের প্রধান সম্পাদক মনোজ কে অরোরা বলেন, ‘‘কক্ষের ভিতর যা যা ঘটে, তা তুলে ধরাই আমাদের কাজ। এই নিয়ম মেনেই আমরা কাজ করি।’’ এক সূত্রের মত, কক্ষে যখনই স্পিকার বা প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন, তখন সমস্ত ‘ফোকাস’ তাঁদের দিকেই থাকে। তা ছাড়া নিয়ম রয়েছে, যখনই কেউ জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা বলবেন এবং কোনও বিতর্কে অংশ নিয়ে বক্তব্য পেশ করবেন, তখনও তাঁদের উপরই ‘ফোকাস’ থাকবে।
সত্য যাতে জনসমক্ষে না আসে সেই চেষ্টাই করছে কেন্দ্র, এই অভিযোগ করে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে টুইটারে লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্নায়ুবিপর্যয় ঘটেছে। সংসদে বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইছেন না কেন তিনি? বিরোধী দলগুলি আলোচনার জন্য তৈরি, অথচ বিজেপি সরকারই অধিবেশন চলতে দিচ্ছে না যাতে সত্যিটা প্রকাশ্যে আসতে না পারে।’