—প্রতীকী চিত্র।
হরিদ্বার জেলা সংশোধনাগারে বন্দিদের নিয়ে রামলীলার আয়োজন করা হয়েছিল। মঞ্চস্থ হচ্ছিল রামলীলা। সেখানে ‘বানর সেনা’-র অংশ ছিলেন দুই বন্দি— প্রমোদ এবং রাজকুমার। বানর সেজে অভিনয়ের মাঝেই কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে জেলের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যান দু’জনে। তাঁদের মধ্যে প্রমোদ যাবজ্জীবনের সাজাপ্রাপ্ত। খুনের আসামি। রাজকুমারের বিরুদ্ধে রয়েছে অপহরণ ও তোলাবাজির অভিযোগ। তিনি বিচারাধীন বন্দি। হরিদ্বারের ওই ঘটনায় ছয় জন জেলকর্মীকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, রামলীলার অভিনয়ের সময় সেখানেই মগ্ন হয়ে গিয়েছিলেন সংশোধনাগারের কর্মী ও আধিকারিকেরা। সেই সুযোগেই সবার অলক্ষ্যে মঞ্চ থেকে নেমে জেলের ভিতরেই একটি নির্মীয়মাণ ভবনের সামনে পৌঁছে যান দু’জনে। সেখানে একটি মই পড়ে ছিল। সেই মই দিয়েই জেলের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যান দুই বন্দি। শুক্রবারের ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। সূত্রের খবর, ধৃতেরা উভয়েই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা।
শুক্রবারের ওই ঘটনায় জেলকর্মীদের ভূমিকায় উষ্মাপ্রকাশ করেছেন হরিদ্বারের জেলাশাসক কর্মেন্দ্র সিংহ। কারারক্ষী ও সংশোধনাগারের আধিকারিকেরা রামলীলায় ব্যস্ত না থেকে যদি নিজেদের দায়িত্ব পালন করতেন, তবে এই ঘটনা এড়ানো যেত বলেই মনে করছেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, “ঘটনায় জেল কর্তৃপক্ষের কর্তব্যে গাফিলতি রয়েছে। মই ব্যবহার করে পালিয়েছেন বন্দিরা। আধিকারিকেরা ও কারারক্ষীরা রামলীলায় ব্যস্ত ছিলেন। ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা রুজু হয়েছে। বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে। সংশোধনাগারে একটি অনুষ্ঠান চলছে মানে এই নয় যে নিরাপত্তায় কোন গলদ থাকবে।”
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, ওই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যে ছয় জল জেলকর্মীকে নিলম্বিত করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন হরিদ্বার সংশোধনাগারের জেলার প্যারেলাল আর্য, ডেপুটি জেলার কুনওয়ার পাল সিংহ, দিনের বেলার হেড ওয়ার্ডার প্রেমশঙ্কর যাদব, ভারপ্রাপ্ত হেড ওয়ার্ডার বিজয় পাল সিংহ, নির্মাণস্থলের দায়িত্বে থাকা বন্দিরক্ষক (জেল ওয়ার্ডেন) ওমপাল সিংহ এবং দ্বাররক্ষক নীলেশ কুমার।
হরিদ্বারের সিনিয়র পুলিশ সুপার প্রমোদ সিংহ ডোভাল জানিয়েছেন, পলাতক বন্দিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনার কথা পুলিশও দেরিতে জানতে পেরেছে বলে দাবি তাঁর। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটলেও কেন শনিবার সকাল সাড়ে ৬টায় পুলিশকে বিষয়টি জানানো হল, সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, “জেল আধিকারিকেরা শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পলাতকদের খোঁজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু আমাদের জানানো হয় শনিবার সকালে। কেন পুলিশকে জানাতে দেরি হল, তা জানার চেষ্টা চলছে।”