ভুল চিকিৎসার মাসুল। ছবি: শাটারস্টক।
মানসিক রোগী ভেবে চিকিৎসকেরা চিকিৎসা শুরু করেছিলেন, শেষমেশ ব্রেন টিউমার ধরা পড়ল রোগীর। ৪৭ বছর বয়সি সেই রোগী বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। ওই মহিলা সর্ব ক্ষণ হ্যালুসিনেট করতেন এবং পরিবারের কারও সঙ্গেই খুব বেশি কথা বলতেন না। তাই চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকেরা মনে করেন, তাঁর মানসিক কোনও সমস্যা রয়েছে।
প্রায় ছ’ থেকে আট মাস ধরে ওই মহিলা সব সময় উদাসীন থাকতেন, পরিবারের কারও সঙ্গে খুব বেশি কথা বলতেন না, একাকিত্বে ভুগতেন। সেই সঙ্গে তিনি সমস্ত কথা ভুলে যাচ্ছিলেন, সঙ্গে তাঁর মাথায় তীব্র যন্ত্রণাও হচ্ছিল। এর পাশাপাশি ওই মহিলার এক পাশে দেখতেও সমস্যা হচ্ছিল, তাঁর ব্যবহারেও অনেকটাই বদল লক্ষ করেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। মহিলার স্বামী তাঁর পরিস্থিতি দেখে তাঁকে মনোবিদের কাছে নিয়ে যান। মনোবিদ প্রায় ৮ মাস ধরে তাঁর চিকিৎসা করেন। রোজ নিয়ম করে ধ্যান করার পরেও মহিলার পরিস্থিতি দিনের পর দিন আরও খারাপ হতে শুরু করে। ওই মহিলার ওজন বেড়ে যায়, তিনি দিনের বেশির ভাগ সময়টাই ঘুমিয়ে কাটাতে শুরু করেন, স্মরণশক্তি আরও কমে যেতে শুরু করে। মহিলার স্বামী বলেন, ‘‘মনোবিদের কাছে গিয়ে কোনও উপকার না হওয়ায় আমি আমার স্ত্রীকে এক জন স্নায়ুর চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। তার পর এমআরআই করার পর আমরা জানতে পারি, ওর কোনও মানসিক সমস্যা নেই, বরং ওর মস্তিষ্কে একটি টিউমার ধরা পড়ে। টিউমারের আকার ইতিমধ্যেই টেনিস বলের মতো হয়ে গিয়েছিল। টিউমারটির অবস্থান ছিল মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোবে, আর সেই কারণেই ওর স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছিল।’’
চিকিৎকদের মতে, ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষেত্রেই স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ লক্ষ করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে অনেকেই সেই উপসর্গ দেখেও অবহেলা করেন। ফলে সমস্যা বেড়ে যায়। ওই মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলেই সঠিক সময়ে একটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর টিউমারটি অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। আপাতত তিনি সুস্থ জীবনে ফিরেছেন।