অ্যানেট দীর্ঘ দিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন। ছবি: সংগৃহীত
‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম’ নিয়ে মহিলাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে দীর্ঘ দু’মাস ধরে বাড়ানো দাড়ি প্রকাশ্যে কামিয়ে আলোচনার শিরোনামে উঠে এলেন বাকিংহামশায়রের বাসিন্দা অ্যানেট। তিনি নিজে ‘পিসিওএস’-এ আক্রান্ত। দীর্ঘ দিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগের বিভিন্ন রকম উপসর্গ দেখা যায়। অ্যানেটের ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষণ হল ‘হিরসুটিজম’ অর্থাৎ, মুখে ঘন ঘন রোম গজায়। সেই সঙ্গে মেজাজের পরিবর্তন, ব্রণ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, ওজন বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যারও মুখোমুখি হয়েছেন।
১৪ বছর বয়সে এই রোগ বাসা বাঁধে অ্যানেটের শরীরে। এখন তিনি ৪৮। ৩৪ বছর ধরে ‘পিসিওএস’-এর সঙ্গে লড়ে যাচ্ছেন তিনি। সঠিক চক্র মেনে ঋতুস্রাব হয় না। চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি সন্তানধারণও করতে পারবেন না। ‘সন্তানের মা হতে চাইলে সাহায্য করতে পারি’ অশালীন মন্তব্যেও শুনতে হয়েছিল তাঁকে। অ্যানেটের কথায়, ‘‘আমি নিশ্চিত যে, আমার মতো আরও অনেক মহিলাকেই এমন কটাক্ষের শিকার হতে হয়। আমেরিকায় প্রতি দশ জন মহিলার মধ্যে এক জন ‘পিসিওএস’-এর সমস্যায় ভুগছেন। ‘পিসিওএস’ নিয়ে কমবেশি সকলে জানলেও এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব রয়েছে। এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে কী কী সমস্যা হতে পারে, সে সম্পর্কে এখনও অনেকেরই ধারণা কম। আমি জানি কতটা যন্ত্রণার এই অসুখ। শুধু শারীরিক নয়, মানসিকও। ওজন বেড়ে যাওয়া, ব্যথা-যন্ত্রণা তো আছেই, সেই সঙ্গে মুখে পুরুষদের মতো দাড়িও গজায়। প্রতি মাসে তা কামাতে হয়।’’ এত দিন সবটাই আড়ালে রাখতেন অ্যানেট। ‘পিসিওএস’-এর বাড়বাড়ন্ত দেখে অ্যানেটের মনে হয় কিছু একটা করা উচিত। সেই মতো দু’মাস ধরে ঠোঁটের চারপাশে গজানো অবাঞ্ছিত রোম তিনি পরিষ্কার না করে বাড়তে দিচ্ছিলেন।
এই রোগকে গুরুত্ব না দিলে কী হতে পারে, তা সকলের সামনে তুলে ধরতেই প্রকাশ্যে নিজেরে দাড়ি কামালেন অ্যানেট। শুধু মহিলা নয়, পুরুষদের মধ্যেও এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা তাঁর লক্ষ্য। পুরুষরাও যাতে তাঁদের মা, স্ত্রী, বোন, প্রেমিকা, বান্ধবীদের মধ্যে পিসিওএস নিয়ে সতর্ক করতে পারে। অ্যানেট নেটমাধ্যমে অত্যন্ত জনপ্রিয়। মহিলাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে তৈরি করে অ্যানেটের প্রত্যেকটি ভিডিয়ো প্রচুর মানুষ দেখেছেন। ‘পিসিওএস’ নিয়ে কাজ করে স্থানীয় একটি সংস্থাকে আর্থিক সাহায্যেও করেছেন তিনি।