ছবি : সংগৃহীত
কিছু দিন আগেই চিনের মঙ্গোলিয়ায় করোনা ভাইরাসের নতুন একটি প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। চিকিৎসকদের মতে, ওমিক্রনের বিএ.৫.১.৭ এবং বিএফ.৭ প্রজাতির ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় অনেক গুণ বেশি। তাই করোনা টিকা নেওয়ার পর বা এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে, তা নতুন এই প্রজাতিটিকে ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
সামনেই দীপাবলি, তার পরেই ভাইফোঁটা। প্রসাশনের তরফে করোনা সংক্রান্ত বিধি-নিষেধে কড়াকড়ি না থাকলেও, নিজেদের স্বার্থে বাধ্যতামূলক ভাবে মাস্ক পরতেই হবে এবং সংক্রমণের সামান্যতম লক্ষণ দেখা দিলেই নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখতে হবে। বিশেষ করে যাঁদের বাড়িতে বয়স্ক মানুষ, শিশু, ক্যানসারে আক্রান্তরা আছেন, তাঁরা অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
ছবি : সংগৃহীত
ওমিক্রনের এই নতুন প্রজাতিটি সম্পর্কে কী মত বিশেষজ্ঞদের?
বিগত কয়েক মাস ধরেই করোনার গ্রাফ নিম্নমুখী। কিন্তু ধরাধামে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ভাইরাসটি প্রতিনিয়ত অভিযোজন করে চলেছে। ফলস্বরূপ একই ভাইরাসের নিত্য নতুন প্রজাতির জন্ম হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগেই ‘ওমিক্রন স্পন’ বা বিএ.৫.১.৭ এবং বিএফ.৭ নামক একটি নতুন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যেই চিনের বেশ কিছু জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের ক্ষেত্রেও সংক্রমণের হার বেশ দ্রুত। দেশের মধ্যে গুজরাতেও এক জনের দেহে এই প্রজাতিটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অভিযোজনের ফলে সৃষ্টি হওয়া ভাইরাসের যে কোনও প্রজাতির ক্ষমতা, অন্যান্য প্রজাতির থেকে বেশি হয়। ওমিক্রনের এই নতুন প্রজাতিটির ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। মানব দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে এবং উপস্থিত অ্যান্টিবডিকে টেক্কা দিতে সিদ্ধহস্ত ‘ওমিক্রন স্পন’।
কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি ‘ওমিক্রন স্পন’-এ আক্রান্ত?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পরীক্ষা ছাড়া নতুন এই প্রজাতিটিকে আলাদা করে চেনার কোনও উপায় নেই। কারণ, দেশের মধ্যে এই প্রজাতিতে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র একটিই। সুতরাং আক্রান্তের সংখ্যা এবং পরীক্ষা না বাড়লে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অন্য প্রজাতিগুলির মতোই জ্বর, গলাব্যথা, সারা শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা, এই জাতীয় লক্ষণগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে দেখা দেবেই।
উৎসবের মরসুমে সংক্রমণ বাড়বে কি?
করোনার বিধি-নিষেধে ছাড় এবং মানুষের লাগামছাড়া মনোভাব, নতুন করে সংক্রমণের ভয় উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসকরা আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, সংখ্যাটি এক হলেও নতুন প্রজাতিটি কিন্তু দেশে ঢুকে পড়েছে। তার উপর শীতকাল আসছে। এটি এমনিই ফ্লুয়ের সময়। তাই অতিরিক্ত সাবধানতা থাকতেই হবে।
করোনা পরিস্থিতি বাড়লেও একটি সময় পর তা আবার আগের পর্যায়ে ফিরে আসবে। তাই সব কিছু বন্ধ করে ঘরে বসে থাকা কোনও সমাধান হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা গড়ে তোলাই একমাত্র হাতিয়ার বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।