পা থাক আরামে। ছবি: সংগৃহীত।
সারা দিন কাজের পর শারীরিক ক্লান্তি ঘিরে ধরা স্বাভাবিক। তবে দৈহিক কষ্টকে কখনও কখনও ছাপিয়ে যায় পায়ের ব্যথা। বাড়িতে থাকলে যে পায়ের উপর চাপ কম পড়ে, তা কিন্তু নয়। বিছানায় না শোয়া পর্যন্ত গোটা দেহের ভার বইতে হয়, পদযুলকে। তাই ছুটির দিন বাড়ি থাকলেও পায়ের বিশ্রাম হয় না। ঘুমের সময়ে পায়ের পেশি যতটুকু আরাম পায়, তা এই ধরনের ব্যথার জন্য যথেষ্ট নয়। অনেকেই পায়ের এই অসহ্য ব্যথা থেকে রেহাই পেতে ঈষদুষ্ণ জলে, সামান্য নুন দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখেন। ফলে পায়ের পেশি, হ্যামস্ট্রিংয়ের ব্যথা কমে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ধরনের ব্যথা নিয়ময় করতে শুধু গরম জল যথেষ্ট নয়। তার জন্য সামান্য একটি ব্যায়াম অভ্যাস করা জরুরি। অফিসে কাজ করতে করতে বা বাড়ি ফিরে টিভি দেখতে দেখতে পায়ের তলায় একটি টেনিস বল রেখে ঘোরালেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
পায়ের তলায় বল রেখে ঘোরালে কী উপকার হয়?
গোটা শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে থাকা অজস্র টিস্যু এসে জড় হয় পায়ের পাতায়। যা দেহটিকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে। দেহের ভার বহন করতে করতে, চোট-আঘাত গেলে বা অতিরিক্ত চলাফেরা করলে এই টিস্যুগুলি নষ্ট হয়। পায়ের পেশি ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। ব্যথা, যন্ত্রণা, প্রদাহ শুরু হয়। পায়ের তলায় বল রেখে, চাপ দিয়ে ঘোরালে ওই নির্দিষ্ট অংশের প্রদাহ কমে। পেশির ব্যথাও বশে থাকে।
কী ধরনের বল ব্যবহার করা যায়?
টেনিস বল ছাড়াও গোলাকার এমন অনেক কিছুই ব্যবহার করা যায়। বাড়িতে যদি ফোম রোলার থাকে, বলের বিকল্প হিসাবে তা-ও ব্যবহার করা যায়।
টেনিস বলের বদলে বেসবল, গল্ফ বল, ক্যামবিস বল ব্যবহার করা যায়। তবে কোন বলটি কার জন্য উপযোগী, তা ব্যথার ধরন এবং পায়ের পাতার জোরের উপর নির্ভর করে।
ব্যথা খুব বেশি হলে বরফ জমা জলের বোতল পায়ের তলায় রাখতে পারেন। দ্রুত প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এই টোটকা। তবে বরফ ঠান্ডা জলের বোতল রাখতে যদি সমস্যা হয়, সে ক্ষেত্রে টেনিস বল খানিক ক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। একই রকম উপকার মিলবে।
টেনিস বল মাটিতে রেখে পায়ের পাতার চাপ দিয়ে ঘোরাতে থাকুন। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে অভ্যাস করবেন এই ব্যায়াম?
টেনিস বল মাটিতে রেখে পায়ের পাতার চাপ দিয়ে ঘোরাতে থাকুন। একসঙ্গে দু’পা দিয়েই করতে পারেন। আবার আলাদা আলাদা ভাবেও করা যায় এই ব্যায়াম। পায়ে ব্যথা থাকলে প্রথমে মিনিট দুয়েক এই ব্যায়াম অভ্যাস করুন। তার পর ধীরে ধীরে সময় বাড়িয়ে নিতে পারেন। তবে ব্যায়াম শেষে ঈষদুষ্ণ জলে মিনিটখানেক পায়ের পাতা ডুবিয়ে বসতে পারলে ভাল হয়। জল থেকে পা তুলে ভাল করে মুছে নিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে হাঁটাহাঁটি করা যাবে না। তাই রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পায়ে গরম জল দেওয়াই ভাল।