শীতকাতুড়ে ভাব কমবেশি অনেকের মধ্যেই এমনটা দেখা যায়। প্রতীকী ছবি।
শীত হোক বা বর্ষা, আবহাওয়ায় কিছুটা স্যাঁতসেঁতে ভাব এলেই যেন শিরশিরে একটা অনুভূতি জন্ম নেয়। অল্প শীতেই কাবু হয়ে পড়েন অনেকে। লেপের ওম ছেড়ে বেরোতেই চান না। বেরোলেও গরমজামার পরতে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। এই শীতকাতুড়ে ভাব কমবেশি অনেকের মধ্যেই এমনটা দেখা যায়। অন্যদের তুলনায় একটু বেশি শীতকাতুরে হলে অনেকেই নানা অসুখের ভয় পান, ভাবেন হয়তো শরীরের অভ্যন্তরে বাসা বাঁধছে এমন কোনও অসুখ, যার প্রকোপে শীত করছে।
চিকিৎসকদের মতে, এই বিষয়টি তেমন উদ্বেগজনক নয়। শীতকালে ঠান্ডা লাগবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কারও একটু বেশি ঠান্ডা লাগে, কারও কম। শরীরের এই তাপমাত্রা গ্রহণ করার ক্ষমতা এক এক জনের এক এক রকম। তবে শীত করার এই প্রবণতা মানেই যে বড় কোনও অসুখের লক্ষণ নয়, তা নয়। বরং শারীরিক দুর্বলতা এর কারণ হতে পারে।
বড় কোনও অসুখের আশঙ্কা নেই মানেই শারীরিক দুর্বলতা অবহেলা করা নয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই দুর্বলতা পুষে রাখলে পরে তা বড় অসুখ ডেকে আনতে পারে।
অন্যদের তুলনায় একটু বেশি শীতকাতুরে হলে অনেকেই নানা অসুখের ভয় পান। প্রতীকী ছবি।
কী কী কারণে এমন সব সময়েই শীত অনুভূত হয় জানেন?
১) চিকিৎসকদের কথায়, শরীরে বি ১২ ভিটামিনের ঘাটতি হলে এমন শীত শীত ভাব আসতে পারে। রক্ত চলাচলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন বি ১২। রক্ত শরীরকে উষ্ণ রাখে, তাই ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতি হলে শরীরের তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। ফলে হয়ে শীত করে।
২) থাইরয়েড গ্রন্থিও ঠান্ডার অনুভূতির অন্যতম কারণ। অনেকের শরীরে থাইরয়েড গ্রন্থি ঠিক মতো কাজ করে না। ‘হাইপোথাইরয়েড’-এর কারণে অতিরিক্ত শীত করে। এই সব রোগীদের গরমের অনুভূতিও খুব। কাজেই খুব শীত অনুভূত হলে থাইরয়েড পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
৩) শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন ও আয়রনের জোগান না থাকলেও শীত করতে পারে। লোহা শরীরের লোহিত রক্তকণিকায় অক্সিজেন সরবরাহ করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তা ছাড়া শরীরের প্রতিটি রক্তকোষে খাদ্যগুণ ও পুষ্টি পৌঁছে দিতেও সাহায্য করে। তাই শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে তা স্বাভাবিক ভাবেই শীতের অনুভূতি আনে।
৪) আপনি কি ধূমপান করেন? শুনতে অবাক লাগলেও এটিও শীত করার পরোক্ষ কারণ। অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে রক্তনালিগুলি সঙ্কুচিত হয়ে গিয়ে রক্ত সংবহনের মাত্রা কমে যায়। ফলে সব সময়ে একটা শীত শীত ভাব অনুভূত হয়।