অফিসে বার বার কফি খান? ছবি: সংগৃহীত।
পরীক্ষার আগে রাত জেগে পড়াশোনা হোক কিংবা অফিসের কাজের চাপে ক্লান্তি কাটানো— বার বার কফির কাপে চুমুক দেওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। ঘুম ঘুম ভাব কাটিয়ে চাঙ্গা হতে কফির কোনও বিকল্প নেই। মানসিক অবসাদে ভুগলেও অতিরিক্ত কফি খেয়ে ফেলি আমরা। আর তার থেকেই শুরু হয় নানা সমস্যা। অতিরিক্ত কফি খাওয়ার অভ্যাস শরীরে কোন কোন সমস্যা ডেকে আনে?
অনিদ্রা: কফিতে ক্যাফিন থাকে। ক্যাফিন বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে ঘুমের বারোটা বাজে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা বেশি কফি খান তাঁরা অনিদ্রায় ভোগেন। বিকেলের পর থেকে কফির কাপে চুমুক না দেওয়াই ভাল।
শরীরে জলের ঘাটতি: কফির প্রকৃতি হল ন্যাচারাল ডাই-ইউরেটিক। তাই অতিরিক্ত কফি শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গেই কিডনিতে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। ফলে বার বার প্রস্রাব পাওয়ায় শরীর থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং সলিউবল মিনারেল বার করে দেয়। সোডিয়ামের শোষণ কমিয়ে দেয়। ফলে শরীরের স্বাভাবিক হাইড্রেশন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। যার ফলস্বরূপ শরীরে জলের ঘাটতি হয়। গরমের মরসুমে এর ফল হতে পারে মারাত্মক।
মানসিক অবসাদ: ঘুম থেকে উঠলে শরীরে কর্টিসোল হরমোন উৎপাদনের হার বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খালি পেটে একটু বেশি মাত্রায় কফি খেলেই কর্টিসোল হরমোনের ক্ষরণ আরও বেড়ে যায়। এতেই ঘটে বিপত্তি। মানসিক চাপ বা ‘স্ট্রেস’-এর কারণ এই হরমোনটি। ফলে সকালে উঠেই দু’তিন কাপ কফি খেয়ে ফেললে মন ভাল হওয়ার বদলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়।
ক্রনিক রোগ: শরীরে স্বাভাবিক মাত্রায় কর্টিসোলে ক্ষরণ বিপাকহার, রক্তচাপ আর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে অত্যধিক মাত্রায় এর ক্ষরণ হাড়ের ক্ষতি করে, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবিটিস এমনকি, হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়ায়।
প্রজনন ক্ষমতা: গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বেশি মাত্রায় কফি খেলে বন্ধ্যত্বের ঝুঁকি বাড়ে। আধুনিক জীবনে অনেকেই বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন, তাই কফি খেয়ে ওই আশঙ্কা আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলার কোনও মানে হয় না।