গলার স্বরে আচমকা বদল কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক।
সর্দি-কাশি হয়নি। কিন্তু, গলার স্বর অস্বাভাবিক রকম ভারী হয়ে যাচ্ছে। কথা বলতে গেলেই গলায় ব্যথা। কর্কশ আওয়াজ বার হচ্ছে। খাবার গিলতে গেলেও কষ্ট। যদি দেখেন, দীর্ঘ সময় ধরে কণ্ঠস্বরে বদল আসছে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
পেশার কারণে যাঁদের জোরে বা চেঁচিয়ে কথা বলতে হয়, তাঁদের এমন সমস্যা বেশি দেখা দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এমন রোগকে বলা হয় 'ল্যারিংজাইটিস'। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এমন রোগী আছেন, যাঁদের এই সমস্যা দীর্ঘকালের। মাঝেমধ্যেই গলার স্বর বসে যায়। তবে শুধু যে চেঁচিয়ে কথা বলার কারণে এই রোগ হতে পারে, তা নয়। দীর্ঘকালীন অম্বলের সমস্যা, অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণেও এমন হতে পারে। ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’ হলে খাদ্যনালি দিয়ে অ্যাসিড উপরে উঠে আসে। তখন গলা-বুক জ্বালা করতে থাকে। আবার স্বরযন্ত্রে পলিপ হলেও এমন অবস্থা তৈরি হতে পারে। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সিরা বেশি ভোগেন এই রোগে।
কী কী লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন
১) গলা বসে যাওয়া।
২) কর্কশ আওয়াজ বার হওয়া।
৩) ঢোক গিলতে গেলে সমস্যা।
৪) শুকনো কাশি কমতেই চাইছে না।
৫) মাঝেমধ্যেই জ্বর, নাক দিয়ে জল পড়ার সমস্যা।
৬) শ্বাস নেওয়ার সময়ে বুকে ব্যথা।
অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেয়েও যদি স্বাভাবিক স্বর ফেরত না আসে, সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে অন্য কোনও গুরুতর সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা তখন, এন্ডোস্কোপ বসিয়ে স্বরনালির জায়গাটা পরীক্ষা করেন। যদি ভোকাল কর্ডে পলিপের মতো মাংসপিণ্ড থাকে, তা হলে দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হয়। লেজ়ারের মাধ্যমেও অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকেরা।
অস্ত্রোপচারের পর ওই মাংসপিণ্ডের বায়োপ্সি করে দেখা হয়, সেটি ‘ম্যালিগন্যান্ট’ কি না। তখন কেমোথেরাপি বা রেডিয়োথেরাপিতে রাখা হয় রোগীকে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কোনও রকম অসুস্থতা ছাড়াও যদি দেখেন, গলার স্বরে আচমকা বদল আসছে, তা হলে ফেলে না রেখে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।