নুন এবং চিনি ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে? ছবি: সংগৃহীত।
যে নুন আর চিনি রান্নায় ব্যবহার করেন, তাতেই নাকি মিশে রয়েছে প্লাস্টিক! সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। বিভিন্ন ভারতীয় সংস্থার নুন এবং চিনির প্যাকেটে মিলেছে এই প্লাস্টিক কণার হদিস। ১৩ অগস্ট, অর্থাৎ মঙ্গলবার, ‘টক্সিক লিঙ্ক’ নামে এক সংস্থা নুন এবং চিনি নিয়ে এই সমীক্ষা প্রকাশ্যে এনেছে। সেই সমীক্ষাপত্রের ছত্রে ছত্রে রয়েছে আশঙ্কা উদ্রেককারী তথ্য। ওই সংস্থার দাবি, বাজারে যে চিনি এবং নুন বিকোচ্ছে, তাতেই মিশে রয়েছে এই ‘মাইক্রো প্লাস্টিক’। শুধু খোলা বাজারে নয়, অনলাইনেও যে নুন এবং চিনি পাওয়া যায়, সেগুলিতেও প্লাস্টিকের অস্তিত্ব রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। সমীক্ষা জানাচ্ছে, চিনির চেয়েও নুনে এই ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতির পরিমাণ বেশি। তাই বলে চিনি প্লাস্টিকমুক্ত নয়। চিনিতেও রয়েছে প্লাস্টিক কণার উপাদান। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, নুনের প্যাকেটে প্রতি কিলোগ্রামে প্লাস্টিক কণা মিলেছে ৬.৭১ থেকে ৮৯.১৫। আয়োডিন যুক্ত লবণে মিলেছে ৮৯.১৫টি প্লাস্টিক-কণা। চিনিতেও রয়েছে ১১.৮৫টি থেকে ৬৮.২৫টি প্লাস্টিক কণা। নুন এবং চিনির মতো রান্নার অপরিহার্য এই দু’টি উপাদানে রাসায়নিকের উপস্থিতির খবরে আতঙ্ক গ্রাস করেছে মানুষের মনে। প্রতিনিয়ত এই উপাদান যদি শরীরে প্রবেশ করতে থাকে, তা হলে আগামী দিনে কী কী শারীরিক সমস্যার কবলে পড়তে হতে পারে? উঠছে প্রশ্ন।
চিকিৎসক মহল এই প্রশ্নের সদুত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক’ শরীরের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, সেটা নিয়েও হয়েছে গবেষণা। প্লাস্টিক কণার দাপটে কী কী ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে শরীর?
প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
ধারাবাহিক ভাবে যদি এই প্লাস্টিক কণা রক্তে মিশতে থাকে, তা হলে প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে শরীরে যে কোনও রোগ জাঁকিয়ে বসার সুযোগ পেয়ে যায়। রোগের সঙ্গে লড়াই করে সুরক্ষিত থাকার সম্ভাবনা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। সাধারণ সর্দিকাশি থেকে কঠিন রোগ— শুধুমাত্র প্রতিরোধ শক্তি না থাকার কারণেই অসুস্থতার কবলে পড়তে হয়।
মারণরোগ ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি
যে কারণগুলির জন্য ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা গোটা পৃথিবীতে ক্রমশ বেড়ে চলেছে, তার মধ্যে এই মাইক্রো প্লাস্টিক অন্যতম। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্লাস্টিক কণা ক্যানসারের নেপথ্যে রয়েছে। এ ছাড়া, স্নায়ুজনিত বিভিন্ন সমস্যা, অনিয়ন্ত্রিণ হরমোন ক্ষরণের জন্যও দায়ী প্লাস্টিক কণা।
গ্যাস-অম্বল জনিত সমস্যা
গ্যাস-অম্বলের জন্য দায় একা বাইরের ভাজাভুজি খাবারের নয়, মাইক্রো প্লাস্টিক এ ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। সাধারণ পেটফাঁপা, অস্বস্তি কিংবা বমি বমি ভাব নয়, মাইক্রো প্লাস্টিকের কারণে এই সমস্যা আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে।