সুস্থ ভাবে দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকার রহস্য কী ছবি: সংগৃহীত
অমরত্বের প্রত্যাশা মানবজাতির নতুন নয়। কিন্তু অমর না হতে পারলেও সুস্থ ভাবে দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকা কিন্তু অসম্ভব নয়। পৃথিবীর যে স্থানগুলিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শতায়ু মানুষ রয়েছেন, সেই স্থানগুলিকে বলা হয় ‘ব্লু জোন’। ইতালির সারডিনিয়া, জাপানের ওকিনাওয়া কিংবা কোস্টারিকার নিকোয়া এমনই কিছু স্থান। আর এই সব স্থানের হাজারো দীর্ঘায়ু মানুষদের মধ্যে যে বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি মিল সেটি হল খাদ্যাভ্যাস। দেখে নিন এই সব স্থানের শতায়ু মানুষরা কী খান, কী ভাবে খান?
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। ডাল: এই সব অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে দেখা যায় হরেক রকমের ডাল জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা। ফাভা নামক এক প্রকারের বিন, ব্ল্যাক বিন, সয়া বিন ও রাজমার মতো শস্য এই সব অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। পাশাপাশি হরেক রকমের ডাল খেতেও বেশ পছন্দ করেন এই অঞ্চলগুলির বাসিন্দারা।
২। পরিমিত মাংস: অনেকেই এখন স্বাস্থ্য ভাল রাখতে মাংস খাওয়ায় লাগাম টানার দিকে ঝুঁকছেন। ব্লু জোনের শতায়ু মানুষরা কিন্তু অনেক আগে থেকেই রপ্ত করেছেন এই অভ্যাস। ব্লু জোনে বসবাসকারী মানুষরা মাসে গড়ে পাঁচ বারের বেশি মাংস খান না। মূলত শূকরের মাংসই বেশি খেতে দেখা যায় এই অঞ্চলের মানুষদের।
৩। ৮০ শতাংশের নিয়ম: কী খাচ্ছেন তার পাশাপাশি কী ভাবে খাচ্ছেন সেই বিষয়টিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। খাবার খাওয়ার ব্যাপারে জাপানের ওকিনাওয়ার মানুষরা মেনে চলেন কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন এক মন্ত্র, নাম— ‘হারা হাচি বু’। কেউ কেউ বলেন চৈনিক দার্শনিক কনফুসিয়াস এই মন্ত্রটি প্রথম প্রচলন করেন। এই মন্ত্রে বলা হয় মানুষের উদর ৮০ শতাংশ ভরাট হলেই বন্ধ করে দেওয়া উচিত খাওয়া। দেহের ওজন, বিপাক ও পুষ্টি ভাল রাখতে খিদে ও পূর্ণ ভোজের মধ্যে ২০ শতাংশ ফারাক থাকা অত্যন্ত জরুরি বলে মত ওকিনাওয়ার মানুষদের।
৪। খাবারের পরিমাণ: নীল জোনে বসবাস করা মানুষদের সকালের জলখাবার হয় সবচেয়ে বেশি ক্যালোরির। যত দিন গড়ায় তত কমতে থাকে খাবারের ক্যালোরির পরিমাণ। রাতের খাবারের পরিমাণ সবচেয়ে অল্প। পাশাপাশি অনেকেই সবিরাম উপোস করেন, এটি এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে খাবার খাওয়া অভ্যাস করা হয়।
৫। পাখির আহার: পাখির আহার বলতে সাধারণত কম পরিমাণ খাবার খাওয়ার অভ্যাসের কথা বলা হয়। শতায়ু ব্যক্তিরা কিন্তু বলছেন যখনই তাঁরা খাবার খান তার পরিমাণ হয় অল্প। একবারে গড়ে ৮৫ থেকে ১১৩ গ্রামের বেশি খাবার খান না তাঁরা।