কিডনি রোগের লক্ষণগুলি নিয়ে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। প্রতীকী ছবি।
ব্যস্ততা, কাজের চাপ, জীবনের নানা জটিলতায় আলাদা করে নিজের খেয়াল রাখার সুযোগ থাকে না সব সময়ে। অনিয়ম আর অবহেলার প্রভাব পড়ে শরীরের উপর। দীর্ঘ দিনের অনিয়মের হাত ধরে দেহে বাসা বাঁধে নানা রোগ। শরীরের অন্দরে কোন অসুখ জন্ম নিচ্ছে, তা বাইরে থেকে সব সময়ে বোঝা যায় না। বিশেষ করে কিডনিতে সমস্যা তৈরি হলে তা ধরা পড়ে অনেক দেরিতে। অনেক ক্ষেত্রেই এমন হয়, একটি কিডনি বিকল হয়ে গেলেও কাজ চলতে থাকে অন্যটি দিয়ে। ফলে ক্ষতিকর আঁচ বাইরে থেকে পাওয়া যায় না। আধুনিক জীবনে কিডনির রোগ বেশি করে ধরা পড়ছে। সমীক্ষা জানাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শরীরে অসুখ ছড়িয়ে পড়ার পর ধরা পড়ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এর একটি কারণ হতে পারে কিডনির রোগের লক্ষণগুলি নিয়ে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। ফলে উপসর্গ শরীরে ফুটে ওঠা সত্ত্বেও বুঝতে পারছেন না। তাই কিডনির রোগ নিয়ে সতর্ক হওয়ার আগে লক্ষণগুলি জেনে নেওয়া দরকার।
দুর্বল লাগা
কাজকর্মে উদ্যম হারিয়ে ফেলা কিডনির সমস্যার অন্যতম প্রধান একটি লক্ষণ। কিডনির মূল কাজই হল রক্তকে পরিশুদ্ধ করা। কাজেই কিডনি সঠিক ভাবে কাজ না করলে রক্তে বিষাক্ত ও অপ্রয়োজনীয় উপাদান বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে ক্লান্ত লাগে। এমনকি, দেখা দিতে পারে রক্তাল্পতার সমস্যাও। রক্তাল্পতার অন্যতম প্রধান লক্ষণই হল স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ক্লান্তি। তাই অত্যধিক গরমের কারণে দুর্বল লাগছে, এই ধারণা নিয়ে বসে না থেকে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখুন।
ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ
কয়েক মিনিট অন্তর অন্তর শৌচালয়ে যেতে হচ্ছে? বার বার মূত্রত্যাগের এই লক্ষণ কিন্তু কিডনি রোদের অন্যতম কারণ হতে পারে। বিশেষত রাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বার মূত্রত্যাগ করতে হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। মূত্রের সঙ্গে রক্ত বেরোনো বা মূত্রে অতিরিক্ত ফেনা হওয়াও কিডনির সমস্যার লক্ষণ। মূত্রে অ্যালবুমিন বেশি থাকলে অতিরিক্ত ফেনা তৈরি হয়। অ্যালবুমিন কিডনি সংক্রান্ত রোগের নেপথ্যে থাকে।
পা ফুলে যাওয়া
কিডনির সমস্যায় সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এর ফলে পা ফুলে যায়। অনেক সময়ে খনিজ লবণের ভারসাম্যের ফলে শরীরের পেশিতে টান লাগার সমস্যা তৈরি হয়। পা ফোলার সমস্যা ফেলে রাখা ঠিক নয়। শরীরের অন্দরে মারাত্মক কিছু না ঘটলে সাধারণত এমন লক্ষণ ফুটে ওঠে না। তাই সতর্ক থাকা জরুরি।
জ্বর
ঠান্ডা লাগেনি, অথচ কোনও কারণ ছাড়াই জ্বর আসছে বার বার। সাবধান, কিডনির সমস্যার কারণেও কিন্তু হতে পারে এমন। ঘন ঘন শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে বিষয়টি নজরে রাখুন। চিকিৎসকের সঙ্গেও পরামর্শ করুন বিষয়টি নিয়ে। অনেক সময় গরমে ঘাম বসেও জ্বর হচ্ছে বলে এড়িয়ে যান। তবে কারণ যা-ই হোক, জ্বর হলে তা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া জরুরি।