বেশি তিসি খেলে কোন কোন বিপদের আশঙ্কা থাকে? ছবি: সংগৃহীত।
সকালের জলখাবারে দুধ-ওট্স খান। সঙ্গে বেশ কিছুটা ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসি ছড়িয়ে নেন। অফিসে কাজের ফাঁকে অল্প খিদে পেলে বা মধ্যরাতে হঠাৎ মিষ্টি কিছু খেতে ইচ্ছে করলে বিভিন্ন বীজ দিয়ে তৈরি স্বাস্থ্যকর লাড্ডুও খান। তার মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে তিসিও থাকে। তিসির পুষ্টিগুণের কথা ভেবেই কখনও কখনও ডাল, তরকারিতেও ভেজানো তিসি মিশিয়ে দেন। কিন্তু অতিরিক্ত তিসি খাওয়া কি ভাল? আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন পুষ্টিবিদ ইন্দ্রাণী ঘোষ।
পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, এই বীজের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এ ছাড়া তিসির মধ্যে ‘লিগন্যান্স’ নামক এক প্রকার উপাদান রয়েছে। যেগুলি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ক্যানসার প্রতিরোধক উপাদান হিসাবে পরিচিত। কিন্তু ইন্দ্রাণীর মত, “কোনও কিছু ভাল বলে তা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার প্রবণতা থেকেই বিপদ হানা দেয়। কোন জিনিস কতটা পরিমাণ খেতে হবে, তা বুঝে নিলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
তিসি বা ফ্ল্যাক্সসিড খেলে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
১) অ্যালার্জি-জনিত সমস্যা থাকলে তিসি খাওয়া যায় না। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, তিসির তেল খেলেও একই রকম সমস্যা হতে পারে। তিসি খাওয়ার পর ত্বকে কোনও ভাবে র্যাশ, চুলকানি, লালচে বা ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। তবে ‘জার্নাল অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, তিসি থেকে অ্যালার্জি হওয়ার ঘটনা বিরল।
২) তিসি অনেক সময়ে প্রজনন হরমোন ইস্ট্রোজেনের প্রাকৃতিক সাপ্লিমেন্টের মতো কাজ করে। ফলে হরমোনের হেরফের হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ঋতুচক্রেও তার প্রভাব পড়ে। জরায়ু সংক্রান্ত সমস্যার নেপথ্যে তিসির ভূমিকা থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন ইন্দ্রাণী।
৩) তিসি কিন্তু বেশ কয়েকটি ওষুধের সঙ্গেও প্রতিক্রিয়া করতে পারে। ইন্দ্রাণী বলেন, “সাধারণত রক্ত পাতলা করার কিংবা প্লেটলেটের ওষুধের সঙ্গে তিসি খেতে বারণ করা হয়। আবার, হরমোন থেরাপি চলাকালীন তিসি খেলেও কিন্তু সমস্যা হতে পারে। তবে সকলের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়।” তাই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উচিত বলেই মনে করেন তিনি।