— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
লোভনীয় বেতনের চাকরির টোপ দিয়ে ভারতীয়দের নিয়ে যাওয়া হয় রাশিয়ায়। তার পরে বাধ্য করা হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে লড়াইয়ে নামতে। গত কয়েক মাসে এমনই নানা অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কেরলের যুবক বিনিল টিবির মৃত্যু খবর প্রকাশ্যে আসার পর এ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে বিদেশ মন্ত্রকও। সেই আবহেই ইউক্রেন জানাল, রুশ সেনায় ভারতীয়দের নিয়োগের কোনও নিশ্চিত তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে নেই! যদিও বিদেশিদের ভুলিয়ে রুশ সেনায় নিয়োগের নিন্দা করেছে কিভ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির দফতরের শীর্য আধিকারিক আনদ্রি ইয়েরমাক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে ভারতীয়দের রুশ সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করার কোনও তথ্য নেই। ইয়েরমাক বলেন, ‘‘আমরা উত্তর কোরীয়দের রুশ সেনায় কাজ করার বিষয়ে জানি। সেই খবর প্রকাশ্যে এসেছে। কিউবার বেশ কয়েকজন নাগরিককেও এ ভাবে টোপ দিয়ে সেনায় নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়াও অন্য বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিককে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা কূটনৈতিক সূত্র মারফত সেই দেশগুলির সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের জানিয়েছি, বিষয়টি অনুচিত। এতে দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি হয়।’’ শুধু তা-ই নয়, রাশিয়ায় আটকে থাকা ইউক্রেনের শিশুদের নিঃশর্ত মুক্তির বিষয়েও ভারতের সাহায্য চেয়েছেন ইয়েরমাক। কিভের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউক্রেনের রুশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলি থেকে অন্তত ২০,০০০ শিশুকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের ফেরাতে ইতিমধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাহায্য চেয়েছেন জ়েলেনস্কি।
রুশ বাহিনীতে ভারতীয়দের নিয়োগের বিষয়ে শুক্রবারই মন্তব্য করেছে বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জওসওয়াল বলেন, “এখনও পর্যন্ত ১২৬ জন ভারতীয়ের রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে কাজ করার খবর পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৯৬ জন ইতিমধ্যে ফিরে এসেছেন। আর ১৬ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।” ২০২৪ সালের শুরুর দিকেই রুশ সেনায় ভারতীয়দের নিয়োগের বিষয়টি নজরে আসে। জানা যায়, রুশ সেনার সহযোগী হিসাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হয়েছে প্রায় শতাধিক ভারতীয়কে। শুধু ভারতই নয়, ইউক্রেনের সঙ্গে সংঘাতের আবহে নেপাল-সহ অন্যান্য দেশেরও বহু নাগরিককে রুশ বাহিনীতে নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। গত বছর জুলাইয়ে রাশিয়া সফরে গিয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। একান্ত বৈঠকে ভারতীয় নাগরিকদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে ‘বন্ধু’ পুতিনকে অনুরোধ করেন তিনি। তার পর থেকেই একে একে রুশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকদের ছেড়ে দেওয়ার কাজ শুরু করে পুতিন সরকার। কিন্তু তার পরও এখনও কয়েক জন ভারতীয় রুশ সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। এ বার তাঁদেরই ফেরাতে তৎপর হয়েছে দিল্লি।