বেশি নুন খেলে কী হবে? ছবি: সংগৃহীত।
কাজে বেরোনোর আগে তাড়াহুড়োয় রান্না করতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি নুন পড়ে গিয়েছে। হাত পুড়িয়ে রান্না করা সেই পদে জল, লেবুর রস, সেদ্ধ আলু মিশিয়েও নুনের মাত্রা সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। অনেকটা পরিমাণে রান্না করা খাবার ফেলে দিতেও মন চাইছে না। বাড়ির বয়স্কদের শরীর খারাপ হতে পারে, সেই সব ভেবে তাঁদের নুনে পোড়া খাবার দেবেন না। কিন্তু নিজেও যদি সেই খাবার খান, তা হলে শরীরের খুব ক্ষতি হবে কি? চিকিৎসকেরা বলছেন, নুনে অনেকটা পরিমাণ সোডিয়াম থাকে। খানিকটা সোডিয়াম শরীরের জন্য ভাল। কিন্তু অতিরিক্ত হয়ে গেলে, তা নানা ভাবে ক্ষতি করতে পারে। সে কারণেই নুন মেপে খেতে বলা হয়।
অতিরিক্ত নুন শরীরের জন্য ভাল নয় কেন?
অতিরিক্ত নুন খেলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে। কারও কারও আবার রক্তচাপ বেড়ে যায়। হৃদ্যন্ত্রের শিরা-ধমনী সংক্রান্ত সমস্যাও বেড়ে যায়। দীর্ঘ দিন ধরে অতিরিক্ত নুন খাওয়ার অভ্যাস করলে একটা সময়ের পর কিডনি বিকল হতেই পারে। এ ছাড়া হজমের সমস্যা, হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা যায়। একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত নুন দেওয়া খাবার ডিমেনশিয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।
১) উচ্চ রক্তচাপ
নুন বেশি খেলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। যা রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার জন্যে অনেকাংশে দায়ী। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তা রক্তবাহিকার উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ফলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
২) কিডনির সমস্যা
শরীরে তরলের মাত্রা ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কিডনি। অতিরিক্ত নুন খেলে শরীরে তরলের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে কিডনির উপর চাপ পড়ে। দীর্ঘ দিন ধরে কিডনির উপর চাপ পড়তে থাকলে তা বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
নুন বেশি খেলে রক্তে রক্তচাপ বেড়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত।
৩) ওয়াটার রিটেনশন
অতিরিক্ত নুন খেলে শরীরে তরলের মাত্রা বাড়তে থাকে। এই অতিরিক্ত তরলই শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জমতে শুরু করে। পায়ের পাতা, গোড়ালি বা হাতের বেশ কিছু অংশে ফোলা ভাব দেখা যায়। সেখান থেকে প্রদাহ বাড়তে পারে।
তা হলে নুন কি একেবারেই অপ্রয়োজনীয়?
চিকিৎসকেরা বলছেন, নুনের মধ্যে রয়েছে আয়োডিনের মতো খনিজ। যা থাইরয়েড হরমোনের কাজকর্ম ঠিক রাখতে সাহায্য করে। শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে নুন। শরীরের ক্রিয়াকলাপ সচল রাখতে অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানের মতো সোডিয়ামও গুরুত্বপূর্ণ। তবে বেশি কোনও কিছুই ভাল নয়। একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত সোডিয়াম খেতে পারেন। লক্ষ রাখতে হবে, তা যেন মাত্রা না ছাড়ায়।