Spending time in nature

পার্কে প্রতি দিন ১ ঘণ্টা সময় কাটালে সারবে অনেক রোগব্যাধি! গবেষণায় কী দাবি বিজ্ঞানীদের

শরীর সুস্থ-সবল রাখতে হলে ও মানসিক ক্লান্তি দূর করতে চাইলে দিনের কিছুটা সময়ে প্রকৃতির মাঝে থাকতেই হবে। সেটা পার্ক হলেই ভাল হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:১৬
Share:

প্রকৃতির মাঝে থাকলে কী কী রোগ দূরে থাকবে? ছবি: ফ্রিপিক।

সারা দিনে সময় করে একটি ঘণ্টা কোনও পার্কে সময় কাটালে শরীরের অনেক রোগব্যাধি সেরে যাবে, গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন ইউরোপের একদল বিজ্ঞানী। ‘নেচার’ বিজ্ঞানপত্রিকায় এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে গবেষকেরা দাবি করেছেন, শরীর সুস্থ-সবল রাখতে হলে ও মানসিক ক্লান্তি দূর করতে চাইলে দিনের কিছুটা সময় প্রকৃতির মাঝে থাকতেই হবে। সেটা পার্ক হলেই ভাল হয়। বাড়ির কাছাকাছি পার্ক না থাকলে, সবুজে ঘেরা জায়গা বা বাগান অথবা খোলা মাঠে কিছু ক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলেও সুফল পাওয়া যাবে।

Advertisement

ম্যাথিউ পি হোয়াইট, জেমস গ্রেলিয়ার, বেনেডিক্ট হুইলার-সহ আরও কয়েক জন বিজ্ঞানী এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় ১৯ হাজার মানুষকে নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে একটি সমীক্ষা চালিয়েছেন তাঁরা। যাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে প্রবীণরাও ছিলেন, আবার এমন লোকজনও ছিলেন, যাঁদের নানা রকম শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে। মুখ্য গবেষক ম্যাথিউ জানিয়েছেন, সপ্তাহে কম করেও ১২০ মিনিট যাঁরা পার্কে সময় কাটিয়েছেন, তাঁরা বাকিদের চেয়ে অনেক বেশি ভাল ছিলেন। এমনও অনেকে ছিলেন যাঁরা অল্প সময়ের মধ্যেই চরম মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা জনিত সমস্যা থেকে রেহাই পেয়েছিলেন। এমনকি হার্টের অসুখ, ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলত্ব, হাঁপানির সমস্যা নিয়ে যাঁরা দীর্ঘ দিন বিভিন্ন রকম চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁরা কেবলমাত্র সবুজ প্রকৃতির মাঝে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়ে অনেক তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন গবেষকেরা।

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বাড়ির চৌহদ্দির বাইরে সবুজ প্রকৃতির মাঝে থাকা ও মানুষজনের সঙ্গে মেলামেশা করার সুফল অনেক। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। পেশির শক্তি বাড়ে এবং স্নায়ুর কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, প্রকৃতির সঙ্গে শরীর ও মনের সংযোগ তৈরি হলে অনেক বেশি সুস্থ ও তরতাজা থাকা যায়। অনেকেই ভাবেন, কেবল ওষুধ খেলেই বুঝি শরীর সারবে অথবা কাউন্সেলিং করালেই মনের অনেক জটিল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, তা একেবারেই নয়। প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে মন এবং শরীরের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। মন ভাল রাখতে চিকিৎসকেরা তাই ‘স্ক্রিন টাইম’ কমিয়ে ‘গ্রিন টাইম’ বাড়িয়ে তোলার নিদান দেন।

Advertisement

দেখা গিয়েছে, প্রকৃতির মাঝে বেশি সময় থাকলে অনিদ্রা বা ‘স্লিপিং ডিজ়অর্ডার’-এর সমস্যাও দূর হয়। দিনের বেলা সবুজ প্রকৃতির মাঝে সময় কাটালে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে যা একটানা ঘুমে সাহায্য করে। প্রকৃতির মাঝে থাকার উপকারিতা আরও অনেক। সমীক্ষায় এমনও দেখা গিয়েছে, সপ্তাহে ১২০ থেকে ২০০ মিনিট পার্কে সময় কাটিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের একাকিত্ব বোধ দূর হয়েছে। সামাজিক মেলামেশা বেড়েছে, এমনকি আগে যাঁরা মোবাইলে ডুবে থাকতেন, তাঁদের মধ্যে সৃজনশীল কাজকর্ম করার ইচ্ছাও তৈরি হয়েছে। প্রবীণদের মধ্যে হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কমে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement