ডায়াবিটিস নিয়ে কী কী রিপোর্ট দিল ল্যানসেট? ছবি: ফ্রিপিক।
বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগী আছেন ভারতেই। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা তেমনই বলছে। ‘দ্য ল্যানসেট ডায়াবিটিস এবং এন্ডোক্রিনোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতের মোট জনসংখ্যার ২৩.৭ শতাংশই নাকি ডায়াবেটিক। সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে প্রায় ১৩ কোটি ৬ লক্ষ ভারতীয়ের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু)-র সঙ্গে ‘এনসিডি রিস্ক ফ্যাক্টর কোলাবরেশন’-এর যৌথ উদ্যোগে ২০২২ সালে এই সমীক্ষাটি চালানো হয়। সম্প্রতি এর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে 'দ্য ল্যানসেট' জার্নালে। সমীক্ষা অনুযায়ী টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ভারতেই। শুধু তা-ই নয়, সমীক্ষা আরও জানাচ্ছে যে, ভারতে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের ৬২ শতাংশেরই নাকি কোনও রকম চিকিৎসাই হয়নি। ১৯৯০ সালের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, ভারতে মোট জনসংখ্যার ১১.৯ শতাংশ মহিলা ও ১১.৩ শতাংশ পুরুষ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত, কিন্তু এখন এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। বর্তমান সমীক্ষা বলছে, ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী ভারতে মোট জনসংখ্যার ২৩.৭ শতাংশ মহিলা ও ২১.৪ শতাংশ পুরুষ ডায়াবিটিসে ভুগছেন।
তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় তথা দক্ষিণ এশিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে প্রি-ডায়াবিটিস থেকে ডায়াবিটিসে এগোনোর হার বিশ্বে সর্বাধিক। এর অন্যতম প্রধাণ কারণই হল সচেতনতার অভাব। সংক্রামক রোগ নিয়ে যত বেশি হইচই হয়, অসংক্রামক রোগের প্রচার ততটাই আড়ালে থেকে যায়। অথচ দেশে অসংক্রামক রোগের প্রকোপই সবচেয়ে বেশি। আশঙ্কার কারণ আরও এই যে, বেশির ভাগ অসংক্রামক ব্যাধির মতো ডায়াবিটিসেরও উৎস জীবনযাপনের শৈলী এবং খাদ্যাভ্যাসে।
মূলত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, খেলাধুলোর অভাব, অতিরিক্ত ‘ফাস্ট ফুড’ খাওয়ার জন্য ছোটরা স্থূলতার শিকার হচ্ছে। যে কারণে ডায়াবিটিস বাসা বাঁধছে শরীরে। সাধারণত, শরীরের বেশ কিছু লক্ষণের প্রতি সজাগ থাকলেই এই অসুখ সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়। যেমন, রক্তের অতিরিক্ত শর্করা বার করে দেওয়ার জন্য শরীর কিডনির উপর চাপ দেয়, ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব পায়। হঠাৎ প্রস্রাবে যাওয়ার প্রবণতা বাড়লেও সতর্ক হতে হবে। হাত-পায়ে ঝিঁঝি ধরা এবং তা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া বা খুব বেড়ে যাওয়াও এর লক্ষণ হতে পারে। ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে দৃষ্টিশক্তিতেও। তাই সব দিক থেকেই সচেতন থাকা জরুরি।