চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
শরীর চাঙ্গা রাখতে নিয়ম করে শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এই এক দাওয়াইতেই গায়েব হতে পারে একাধিক রোগ। তবে অফিসের ব্যস্ততা ও সংসারের হাজারটা কাজ সামলে জিমে যাওয়ার সময় কোথায়? ইচ্ছে থাকলে বাড়িতে আধ ঘণ্টা সময় বার করে যোগাসন অভ্যাস করতে পারেন। কেবল রোগা হতেই নয়, নানা শারীরিক সমস্যা দূর হতে পারে নিয়ম করে যোগাসন করলে। তবে সঠিক নিয়ম মেনে যোগাসন করলে তবেই মিলবে ফল। দিন দিন আমাদের স্ক্রিন টাইমের পরিমাণ বাড়ছে। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত মোবাইল, টিভি কিংবা ল্যাপটপ-ট্যাবের পর্দার দিকেই থাকছে আমাদের নজর। পুজোর আগে শরীরের পাশাপাশি চোখের যত্ন নিতে কোন কোন আসন অভ্যাস করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজকের আসন পামিং ও ব্লিঙ্কিং।
পামিং ও ব্লিঙ্কিংয়ের অর্থ, করতল চাপা দিয়ে চোখ পিটপিট করা। আমরা শুধুই যে চোখ দিয়ে দেখি তা নয়, দেখতে সাহায্য করে মস্তিষ্কও। কোনও জিনিস চোখে দেখার পর মস্তিষ্ক জিনিসটির আকার সম্পর্কে ধারণা দেয়। সারা দিন ধরে চোখের উপর নানা কারণে অনেক অত্যাচার করি। তাই চোখের চাই বাড়তি যত্ন।
কী ভাবে করবেন এই ব্যায়াম দু’টি?
এক নম্বর ব্যায়াম
পামিং
দু’হাত ভাল করে ধুয়ে ম্যাটের সোজা হয়ে শান্ত মনে বসুন। এ বার দুই হাত নাগাড়ে ঘষতে হবে যত ক্ষণ না করতল গরম হচ্ছে। এ বার দু’হাতের তালু দিয়ে চোখে আলতো করে চাপা দিন। খেয়াল রাখবেন যেন চাপ না পড়ে। এ বার অনুভব করার চেষ্টা করুন গরম করতলের শক্তি হাত থেকে চোখে সঞ্চারিত হয়ে চোখের চারপাশের পেশি আরাম পাচ্ছে কিনা। এই সময়ে চোখ অন্ধকারে বিশ্রাম ও আরাম পায়। যত ক্ষণ পর্যন্ত হাতের গরম চোখে সঞ্চারিত হচ্ছে তত ক্ষণ এই অবস্থায় থাকুন। এ বার চোখ বন্ধ অবস্থাতেই হাত নামিয়ে নিন। একই ভাবে দু’হাতের করতল ঘষে গরম করে চোখ আবারও চাপা দিন। খেয়াল রাখবেন যেন আঙুলের চাপ চোখে না লাগে, আলতো করে হাত রাখতে হবে। টানা তিন বার এইভাবে অভ্যাস করুন।
দুই নম্বর ব্যায়াম
ম্যাটের উপর বসে চোখ খুলে রেখে দ্রুত ১০ বার চোখ পিটপিট করুন। তার পর চোখ বন্ধ করে ২০ সেকেন্ড বসুন। এ বার চোখ খুলে দ্রুত চোখ খুলুন ও বন্ধ করুন ১০ বার। এর পর চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন। টানা ৫ বার অভ্যাস করুন এই ব্যায়াম।
কেন করবেন?
চোখ ও মস্তিষ্কের সম্পর্ক অত্যন্ত জটিল ও একে অপরের উপর নির্ভরশীল। রাতে বই পড়া, টেলিভিশন দেখা, মোবাইল ব্যবহার করা তো আছেই। এ ছাড়া, কোনও রকম বিশ্রাম ছাড়াই নাগাড়ে কম্পিউটারে কাজ করি। চোখের উপর যে চাপ পড়ে, তার প্রভাব সরাসরি পড়ে মস্তিষ্কের উপর। পামিং করা হলে চোখের পেশি কিছুটা উষ্ণতা পায় ও আরামদায়ক অনুভুতি হয়। কর্নিয়াকে ঠিক রাখার জন্য যে তরল নিঃসৃত হয় পামিংয়ের ফলে তার ক্ষরণ বাড়ে। ফলে চোখ ভাল থাকে। স্ক্রিন টাইম বেশি হলে চোখ শুষ্ক হয়ে পড়ে। ফলে দেখতে অসুবিধা হয়। এর ফলে চোখে বেশি চাপ পড়ে। ব্লিঙ্কিংয়ের ফলে চোখে জলের ভারসাম্য ঠিক থাকে।