পটল খাবেন কেন? ছবি: সংগৃহীত।
পটলের দোরমা খেতে ভালবাসেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। আবার পটলের নাম শুনলে তেলে বেগুনে জ্বলতে থাকা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। তবে বাজারে যে সব সব্জি পাওয়া যায়, তার প্রত্যেকেরই তো কিছু না কিছু পুষ্টিগুণ আছে। সেই দলে শীতের সব্জি বিট, গাজর, ব্রকোলি কিংবা বেল পেপার রয়েছে। তেমনই রয়েছে ‘পাশের বাড়ি মেয়ে’ পটলও। কিন্তু ওই পাশের বাড়ির তকমা রয়েছে বলেই হয়তো এই সব্জিকে নিয়ে তাচ্ছিল্য করেন অনেকে। তবে বিজ্ঞান কিন্তু উল্টোটাই বলছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, বিভিন্ন রকম ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর পটল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন এ এবং সি রয়েছে পটলে। তা ছাড়া, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, পটাশিয়াম এবং গন্ধকের মতো খনিজ রয়েছে এই সব্জিতে। তাই একেবারে সেদ্ধ না খেতে ভাল না লাগলে ঝোল, তরকারি, দোরমা কিংবা মিষ্টি কোনও পদে পটল খাওয়াই যায়।
১) কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
পটলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। ফাইবার পাচনতন্ত্র ভাল রাখতে সাহায্য করে ও মল নির্গমনে সহায়তা করে। ফলে পটল যেমন এক দিকে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পারে, তেমনই অন্য দিকে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।
২) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
পটলের বেশ ভাল পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি এক দিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং অন্য দিকে জারণ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট বিভিন্ন ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলের ক্রিয়া থেকে দেহকে রক্ষা করতেও সাহায্য করে। বিশেষত মরসুম বদলের সময়ে হওয়া সর্দি-জ্বর প্রতিরোধ করতে কাজে আসতে পারে পটল। লিভারের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্যও পটল বেশ উপকারী।
৩) ওজন নিয়ন্ত্রণে
পটলে যে ফাইবার পাওয়া যায়, তা পাচিত হতে দীর্ঘ ক্ষণ সময় লাগে। ফলে দীর্ঘ ক্ষণ খিদে পায় না। আবার ১০০ গ্রাম পটলে মাত্র ২০ ক্যালোরি থাকে। ফলত যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন কিন্তু বুঝতে পারছেন না, কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত, তাঁদের জন্য পটল একটি ভাল বিকল্প হতে পারে।
৪) কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে
পটল রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমাতে ও ভাল কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে হৃদ্যন্ত্র ভাল থাকে। কমে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
পটল এবং পটলের বীজ ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য বেশ উপযোগী। ছবি: সংগৃহীত।
৫) ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে
পটল এবং পটলের বীজ ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য বেশ উপযোগী। পটলে ফ্ল্যাভিনয়েড জাতীয় উপাদান থাকে, থাকে কপার, পটাশিয়াম ম্যাগনেশিয়াম। এই উপাদানগুলি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর।
৬) ত্বকের সমস্যায়
শুষ্ক ত্বকের সমস্যা, র্যাশ, চুলকানি বা এগজ়িমার মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে পটল। এমনকি, চটজলদি কাটা-ছড়ার ক্ষত সারাতেও দারুণ কাজ করে পটল। তাই খেলতে বা দৌড়তে গিয়ে কোথাও কেটে গেলে তা শুকোতে সাহায্য করে পটল।
৭) সংক্রমণজনিত সমস্যার সমাধানে
ঠান্ডা লাগা, সংক্রমণজনিত সর্দি-কাশি কিংবা হাঁচির মতো শারীরিক সমস্যা দূরে থাকে পটল খেলে। তাই মরসুমি সব্জি যেমন খাবেন, তেমন পটলকেও সারা বছরের সঙ্গী করে নিন।