শিশুদের খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন— সব কিছুর সাম্য রাখতেই হবে। ছবি: ফ্রিপিক।
সন্তানকে সবই খাওয়াচ্ছেন, কিন্তু তা-ও প্রোটিনের ঘাটতি হচ্ছে? বাবা-মায়েরা অনেক সময়েই বুঝতে পারেন না যে, কেবল মাছ-মাংস খাইয়ে গেলেই প্রোটিনের চাহিদা মেটে না। সুষম খাবারই খাওয়াতে হবে শিশুকে। সেই সঙ্গে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনও দরকার। বাইরের খাওয়া, ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত মাংস বেশি খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা তো মিটবেই না, বিভিন্ন রকম অসুখবিসুখ হানা দেবে কম বয়স থেকেই। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ মানুষের মধ্যে সঠিক খাদ্যাভ্যাস নিয়ে নানা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। বিশেষত, গর্ভাবস্থায় কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত, সন্তান ও মা দু’জনের শরীরের জন্য কতটা প্রোটিন, ভিটামিন জরুরি সেগুলো নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশুদের বড় হয়ে ওঠার জন্য প্রোটিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি মস্তিষ্কের বিকাশেও প্রোটিন জরুরি। বাড়ন্ত শিশুর পেশি-হাড়ের গঠন মজবুত করা তো বটেই, ত্বক, চুল ভাল রাখতেও প্রোটিন জরুরি। তাই শিশুদের খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন— সব কিছুর সাম্য রাখতেই হবে।
প্রোটিনের ঘাটতি হলে শিশু খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত অবসন্ন হয়ে পড়বে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে, ফলে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ভোগাতে পারে। পেশির শক্তি কমবে। গায়ে হাত-পায়ে ব্যথা হবে। শিশুর বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশেও ঘাটতি হবে। মনোযোগ কমবে, মনে রাখার ক্ষমতাও কমবে। শরীরে কোনও ক্ষত হলে তা সহজে সারতে চাইবে না।
প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে কী কী খাওয়াবেন শিশুকে?
বিভিন্ন রকম ডাল ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাওয়াতে হবে শিশুকে। ডালে প্রোটিনের পাশাপাশি ভিটামিন, খনিজও রয়েছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও উপযোগী।
সিদ্ধ ডিম খাওয়াতে ভুলবেন না। ডিমে প্রোটিন তো আছেই, পাশাপাশি ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন এ, বি ১২, বি ৫, ভিটামিন ডি, জিঙ্ক ভরপুর মাত্রায় থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে, রোজ একটি করে ডিম খাওয়াতেই পারেন।
মাছ বা মাংসের মধ্যে ছোট মাছ খাওয়াই ভাল। মৌরলা, দেশি ট্যাংরা, কাজরি মাছ, ফলুইতে প্রোটিন, ভিটামিন ভরপুর মাত্রায় থাকে। রেড মিট বেশি দেবেন না শিশুকে। বদলে কম তেল ও মশলা দিয়ে চিকেন রেঁধে দিন। সব্জি দিয়ে চিকেন স্যুপ খুবই উপকারী।
শিশু যদি আমিষ খেতে না চায়, তা হলে দুধ, সয়াবিন রাখুন ডায়েটে। প্রোবায়োটিকের জন্য দই খাওয়াতেই হবে। তবে মিষ্টি দই নয়। সবচেয়ে ভাল হয়, যদি ঘরে পাতা দই রোজ খাওয়াতে পারেন। কয়েক রকম বাদাম খাওয়াতেই হবে। কাঠবাদাম, পেস্তা, আখরোট খেলে প্রোটিনের চাহিদা তো মিটবেই, পর্যাপ্ত ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও পাবে শিশু।