Child Aggression

সন্তান কি অতিরিক্ত মারামারি করছে? স্কুলে অভিযোগের পাহাড়, কী ভাবে সামলাবেন খুদেকে?

মুখে মুখে তর্ক, কোনও কথা না শোনা, কিছু ক্ষেত্রে জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলা বা অবাধ্য কোনও আচরণও ক্রমশ রপ্ত করে ফেলছে খুদেরা। এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয়?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৪ ১২:৪৬
Share:

সন্তানের রাগ, জেদ সামলাবেন কী করে, সহজ উপায় জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।

সন্তান কি খুব মারকুটে হয়ে যাচ্ছে? স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করছে, বিকেলে খেলতে গিয়েও ঝগড়া-মারামারি। ইদানীং ছোট থেকে বড় সকলেরই রাগের পারদ চড়ছে। সন্তানের রাগ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন মা-বাবারা। একরত্তির এত রাগই বা কেন হবে? আর কথায় কথায় মারামারি একেবারেই ভাল আচরণ নয়। সন্তানকে শাসন করতে গিয়ে আরও কড়া হতে হচ্ছে বাবা-মাকে। কিন্তু হিতে বিপরীত হচ্ছে, উত্তরোত্তর বাড়ছে সন্তানের রাগ। ফলে দূরত্ব বাড়ছে মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের। মুখে-মুখে তর্ক, কোনও কথা না শোনা, কিছু ক্ষেত্রে জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলা বা অবাধ্য কোনও আচরণও ক্রমশ রপ্ত করে ফেলছে খুদেরা। এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয়?

Advertisement

ছোটবেলায় মারামারি করা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। খেলতে গিয়ে এমন হয়েই থাকে। কিন্তু রাগ, জেদ আর কথায় কথায় অন্যের গায়ে হাত তোলাটা যদি অভ্যাসে পরিণত হয়, তখন সতর্ক হতে হবে। হয়তো দেখলেন স্কুলে সমবয়সিদের মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে অথবা জামাকাপড় ছিঁড়ে দিয়েছে। যদি দেখেন, নিজের ভাই বা বোনের গায়েও হাত তুলছে যখন তখন, অথবা বয়সে বড়দের সঙ্গেও আচরণ তেমনই— তখন তা চিন্তার বিষয়।

১) বাবা-মায়েরা এমন পরিস্থিতিতে সন্তানকে বকাঝকা না করে ভাল ভাবে বোঝান। হয়তো এমন হতেই পারে, আপনাদের সারা দিন কাছে না পেয়ে একরত্তির মনে পাহাড়প্রমাণ অভিমান জমে থাকছে। তারই বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এ ভাবেই। সে ক্ষেত্রে সন্তানকে সঙ্গ দিন। চাকরি বা কাজের সূত্রে দিনভর বাইরে থাকলেও ওর সঙ্গে ফোনে বা ভিডিয়ো কলে কথা বলুন। বাড়ি ফিরে একসঙ্গে সময় কাটান। তখন দুষ্টুমি করার জন্য না বকে বরং ওর কথা শুনুন। ভাল ভাবে বোঝান কোনটা ঠিক আর কোনটি নয়।

Advertisement

২) মোবাইল দেখার সময় কমিয়ে দিন। আপনি যখন বাড়িতে থাকবেন না, তখন খুদেকে শান্ত রাখতে মোবাইল বা ট্যাব দিয়ে যাবেন না। খুব বায়না করলে দিনে একটা নির্দিষ্ট সময় মোবাইল দেখার জন্য রাখুন। তবে তা যেন ঘণ্টাখানেক না হয়। ২০-৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ করুন। খুদের পাশে বসে মোবাইলে শিক্ষামূলক জিনিস দেখান। মোবাইলে এখন খুদেরা সহজেই ইউটিউব বা অন্যান্য সমাজমাধ্যম খুলে ফেলে। এমন কিছু বিষয় তারা দেখে, যা তাদের মন ও মস্তিষ্কে প্রভাব বিস্তার করে। সে কারণেও এমন আচরণ দেখা যেতে পারে।

৩) খুদে যেন সমাজমাধ্যমের পাতায় চোখ না রাখে, তা খেয়াল করতে হবে বাবা-মাকেই। তাই সন্তানের সামনে বসে নিজে মোবাইল দেখবেন না বা ফেসবুক-হোয়াট্‌সঅ্যাপে চ্যাট করবেন না। এখন বাবা-মায়েদের থেকেই খুদেরা মোবাইলে এমন জিনিস দেখে ফেলে, যা পুরোপুরি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। তাই সে দিক থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

৪) সন্তান যদি অতিরিক্ত অবাধ্য হয়ে যায়, তা হলে তাকে সাঁতার, মার্শাল আর্ট, যোগব্যায়াম এমনই কিছুতে ভর্তি করে দিন, যাতে সে চনমনে থাকে। ছবি আঁকা, গান বা নাচ শেখা, নাটক-আবৃত্তি ইত্যাদি সৃজনশীল কাজেও ব্যস্ত রাখুন খুদেকে, যাতে সবসময়েই ইতিবাচক চিন্তাভাবনা আসে তার মাথায়।

৫) সারা দিন পরে মা-বাবা বাড়ি ফেরার পরে সন্তান হয়তো মনে মনে তাদের সঙ্গে খেলতে চাইছে, কিন্তু মা-বাবা তখন ক্লান্ত শরীরে নিভৃতি চাইছেন। এই যে রোজকার একটা সংঘর্ষ, এটাও অনেকাংশে দায়ী। তাই খুদে কী চাইছে তা বুঝতে হবে। নিজের পরিস্থিতিও সন্তানকে বোঝাতে হবে। আপনি কেন বাড়িতে থাকতে পারছেন না, আপনার কাজের ধরন ওদের বলতে হবে।

৬) বেশির ভাগ সময়েই সন্তান রেগে গেলে অভিভাবকেরা আরও রেগে যান। গায়ের জোরে তাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। অনেক সময়ে গালমন্দও করেন। সন্তান রেগে গেলে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটলে কিন্তু তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তাই খুদের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ধীরে ধীরে, জোর করে নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement