রোজ দুধ খাওয়া ভাল, দই না পনির? ছবি: ফ্রিপিক।
দুধ খাওয়া বেশি ভাল, না কি পনির বা দই? এই নিয়ে নানা রকম মতামত আছে। কেউ দুধ হজম করতে পারেন, আবার কারও দুধে অম্বল হয়, কিন্তু পনিরে নয়। আর দই হল প্রোবায়োটিক। খাদ্যতালিকায় টক দই রাখার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। সুতরাং পুষ্টিগুণে কোনটি বেশি এগিয়ে এবং কোনটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী, সে নিয়ে চর্চা চলেই। জেনে নেওয়া যাক, কোনটির কী গুণাগুণ।
দুধ হল সুষম খাদ্য। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম ও পটাশিয়াম আছে। এক কাপ দুধে ৮ শতাংশ ভিটামিন বি১২, ২ শতাংশ ভিটামিন এ, ১২ শতাংশ ক্যালশিয়াম, ৪ শতাংশ পটাশিয়াম, ১ শতাংশ সোডিয়াম ও ২ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। দুধ হজম করতে পারলে ভাল, সে ক্ষেত্রে প্রতি দিন খেলে উপকারই হবে। তবে দুধ কোন সময়ে খাচ্ছেন এবং কতটুকু, তা জানা জরুরি। যেমন অনেকেই দুধ সকালে খেয়ে ফেলেন, তার পরেও গলা-বুক জ্বালা শুরু হয়। যাঁদের অম্বলের ধাত, তাঁদের সকালে দুধ না খাওয়াই ভাল। বরং খেতে হবে রাতে। যাঁদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে, তাঁরা দুধ বুঝেশুনে খাবেন।
পনিরে প্রোটিন খুব বেশি মাত্রায় থাকে। পনির হজমশক্তি বাড়ায়। হার্টের স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। তবে পনির খুব বেশি মাত্রায় খেয়ে ফেললেই মুশকিল। সপ্তাহে এক বার খেলে ক্ষতি নেই।
ঘরে পাতা টক দই শরীরের জন্য খুবই ভাল। পুষ্টিবিদের কথায়, ১০০ গ্রামের মতো দইতে ৮ শতাংশ ক্যালশিয়াম, ১৫ শতাংশ সোডিয়াম, ২ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম, ২ শতাংশ পটাশিয়াম থাকে। দই কিন্তু রোজ না খেলেই ভাল। সপ্তাহে ৩ দিন দই খেলে তা উপকারে আসবে। মনে রাখতে হবে, রাতে টক দই একেবারেই খাওয়া ঠিক নয়, খেতে হবে দু’টি মিলের মধ্যবর্তী সময়ে।
কারা কোনটি বুঝেশুনে খাবেন?
ল্যাক্টোজ় ইনটলারেন্ট হলে দুধ না খাওয়াই ভাল। হজমের সমস্যা, কিডনিতে স্টোন হলে অথবা ডায়াবিটিস থাকলে দুধ বুঝেশুনে খেতে হবে।
অ্যালার্জি-জনিত রোগ, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে পনির বুঝেশুনে খেতে হবে। যাঁরা ওজন কমাতে চাইছেন, তাঁদের পনির না খাওয়াই ভাল। অথবা খেলে খুব কম পরিমাণে খেতে হবে।
ত্বকের অ্যালার্জি-জনিত রোগ, অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা থাকলে দই না খাওয়া বা কম খাওয়াই ভাল। আর্থ্রাইটিসের ভুগছেন যাঁরা, তাঁরাও দই খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। সর্দি-কাশির সমস্যা থাকলেও দই বুঝেশুনে খেতে হবে।