মালাইকা অরোরা কী ভাবে 'ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং' করছেন? এতে কতটা লাভ হবে? ফাইল চিত্র।
তাড়াতাড়ি মেদ ঝরাতে হলে কেবল শরীরচর্চা করলেই চলবে না। তার সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসেও রাশ টানতে হবে। চটজলদি ওজন কমাতে ইদানীং ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ ডায়েট বেশ জনপ্রিয়। এই বিশেষ ডায়েটে খাবারের ক্ষেত্রে তেমন কড়া বিধিনিষেধ থাকে না। কেবল সময় ধরে ডায়েট করতে হয়। তাই তরুণ প্রজন্ম আরও অনেক বেশি এই ডায়েটের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। বলিউড তারকারা প্রায়ই এই ধরনের ডায়েট করার কথা বলে থাকেন। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে মালাইকা অরোরা জানিয়েছেন, একটি বিশেষ পদ্ধতিতে তিনি ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করেন। আর তাতেই এত ফিট তিনি।
মালাইকার ফিটনেস সত্যিই ঈর্ষণীয়। ৫০ ছুঁইছুঁই অভিনেত্রীর চেহারায় তারুণ্যের জেল্লা স্পষ্ট। মালাইকা কী ভাবে শরীরচর্চা করেন, কেমন ডায়েট করেন, সে নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। তাই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ নিয়ে মালাইকা যা বলেছেন সে নিয়ে রীতিমতো চর্চা হচ্ছে। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়েই তিনি এই ডায়েট শুরু করেছেন। রোজ নয়, বরং একদিন অন্তর একদিন ফাস্টিং করেন তিনি। এতে তাঁর শরীরে কোনও সমস্যাই হচ্ছে না।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হল দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে উপোস করে থাকা। শরীরের চাহিদা বুঝে উপোসের সময়কাল ১০ থেকে ১৮ ঘণ্টা এমনকি, ২২ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। এই ডায়েটের ক্ষেত্রে দিনে ছয় থেকে আট ঘণ্টার মধ্যেই খেয়ে নিতে হয়। আর বাকি সময়টা অর্থাৎ, ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা উপোস করেই কাটাতে হয়। সাধারণত রাতের খাওয়ার পর থেকে পরের দিন প্রাতরাশ বা দুপুরের খাওয়া শুরু করার মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান রাখতে হয়। এই ডায়েট নিয়ম মেনে করলে যেমন লাভ হয়, তেমনই যদি নিয়ম না মানা হয় তা হলেই শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে থাকে। পুষ্টির ঘাটতিও হয়।
এই বিষয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ বৈশালী বর্মা জানিয়েছেন, ইন্টামিটেন্ট ফাস্টিং নিয়ম মেনে করলে বিপাকহার নিয়ন্ত্রিত হয়। ফলে মেদ যেমন কমে তেমনই শরীরের আরও অনেক সমস্যার সমাধান হয়। যেমন, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়, হজমশক্তি আরও বাড়ে, হার্ট-লিভার ভাল থাকে, হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে। মালাইকা যদি নিয়ম মেনে এক দিন অন্তর এক দিন ফাস্টিং করেন, তা হলে তাতে কোনও ক্ষতি নেই। তবে বেশির ভাগ মেয়েরাই এখন ইন্টারনেট দেখে বা লোকজনের কথা শুনে ইচ্ছামতো ফাস্টিং শুরু করেন। তখনই সমস্যা দেখা দেয়।
পুষ্টিবিদের কথায়, শুরুতে ৮-১০ ঘণ্টা উপোস করে দেখতে পারেন। শরীর যদি সইয়ে নিতে পারে তা হলে সময় বাড়িয়ে ১৪-১৬ ঘণ্টা করা যেতে পারে। এই ডায়েট চলাকালীন প্রচুর শাকসব্জি, মাছ-মাংস এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তবে পরিমিত পরিমাণে। আপনি যতটা পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করছেন সেই পরিমাণ ক্যালোরি খরচ হচ্ছে কি না, সেটাও নজরে রাখা জরুরি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অল্প অল্প করে বার বার খেতে হবে। খাবারের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবারের সঠিক ভারসাম্য থাকা জরুরি। বেশি করে জল খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়াও জরুরি। তবেই শরীর সুস্থ থাকবে।