সমীক্ষা বলছে, কোভিডের সময়ে প্রায় ৪ শতাংশ মহিলা মানসিক উদ্বেগের শিকার হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, ২০২০ সাল অর্থাৎ করোনাকালের পর থেকে মহিলাদের মধ্যে মানসিক উদ্বেগ, রাগ, অবসাদের পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে। যা গত ১০ বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। ‘হলজিক গ্লোবাল উইমেনস হেলথ ইনডেক্স’-এর করা সমীক্ষা এমনটাই জানাচ্ছে। বিশ্বের ১২২ টি দেশের প্রায় ৬৬,০০০-এরও বেশি মহিলাদের এই সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রায় ৪৩ শতাংশ মহিলা জানিয়েছেন, করোনা আবহের পর থেকে তাঁরা মানসিক উদ্বেগে ভুগছেন। বাড়ি থেকে কাজ, বেকারত্ব, সম্পর্কের অবনতি, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা— সব মিলিয়ে অবসাদ গ্রাস করেছে। অবসাদের পাশাপাশি নানা কারণে রয়েছে উদ্বেগও। সমীক্ষা বলছে, কোভিডের সময়ে প্রায় ৪ শতাংশ মহিলা মানসিক উদ্বেগের শিকার হয়েছেন। অবসাদ, উদ্বেগ ছাড়াও ব্যক্তিগত কারণে প্রবল দুঃখের সময় পার করেছেন এমন মহিলার সংখ্যা প্রায় ৩২ শতাংশ।
ব্যক্তিগত কারণে প্রবল দুঃখের সময় পার করেছেন এমন মহিলার সংখ্যা প্রায় ৩২ শতাংশ। ছবি- সংগৃহীত
গবেষকরদের মতে, কোভিড-ই এর একমাত্র কারণ। এই ভাইরাস যে শুধু শরীরে থাবা বসিয়েছে এমন নয়। মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই এর শিকার। কোভিড চলাকালীন উদ্বেগ এবং অবসাদে ভোগা পুরুষের সংখ্যা ৩৯ শতাংশ। মহিলাদের তুলনায় যা কিছুটা হলেও কম। আসলে কোভিডকালে অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। কর্মহীন অবস্থায় মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। সামনে একটা অনিশ্চিত ভবিষৎ। অনেকেই আছেন যাঁরা বাড়িতে একমাত্র রোজেগেরে। পরিবারের দায়িত্ব তাঁদের কাঁধে। এই পরিস্থিতিতে জীবনে নেমে আসা অপ্রত্যাশিত বেকারত্ব একটা অনিশ্চিয়তার মুখে দাঁড় করিয়েছিল অনেককেই। অর্থনৈতিক সমস্যা তো ছিলই।
প্রায় দু’বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগও বন্ধ ছিল। ফলে অনেকেই একটা সংশয়ের মধ্যে ছিলেন। সামনের দিনগুলি কেমন কাটবে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর ভাবে প্রভাব ফেলেছিল। কোভিড পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্থিতিশীল। কিন্তু কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে এখনও। মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ স্থিতিশীল হতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।