‘ফ্রোজেন শোল্ডার’ ভোগাচ্ছে? ছবি: শাটারস্টক
অনেক সময় ঘুম থেকে উঠে কিংবা স্থির অবস্থা থেকে নড়াচড়া করতে গেলে কাঁধে প্রবল ব্যথা অনুভূত হয়। মনে হয় যেন কোনও মতেই নাড়ানো যাচ্ছে না কাঁধ। বিজ্ঞানের ভাষায় সমস্যাটির নাম ‘অ্যাডেসিভ ক্যাপসুলাইটিস’। তবে সাধারণত এই সমস্যা আমরা ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’ মানেই বেশি চিনি। এই রোগে কাঁধের বল ও সকেটসন্ধি আক্রান্ত হয়। মূলত ৪০ থেকে ৬০ বয়সি ব্যক্তিদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
কেন হয় এই সমস্যা?
যে অস্থিসন্ধি দ্বারা বাহু ও কাঁধ সংযুক্ত থাকে সেই অস্থিসন্ধিতে অবস্থিত হাড়, লিগামেন্ট ও টেনডনগুলি ক্যাপসুলের মতো এক প্রকার টিস্যু দ্বারা আবৃত থাকে। এই ক্যাপসুল ফুললে বা শক্ত হয়ে গেলে ফ্রোজেন শোল্ডার দেখা দিতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক পর্যায় কাঁধ ঘোরানোর সময় ব্যথা হয়, সময়ের যত এগোতে থাকে, ততই ব্যথা অসহ্যকর হয়ে ওঠে এবং ঘাড় ও কাঁধের অঞ্চল শক্ত হয়ে যায় তখন সমস্যা আরও বাড়ে। তৃতীয় ধাপে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে কাঁধ, ধীরে ধীরে নাড়ানো যায় হাত।
প্রতীকী ছবি
ডায়াবিটিসের সঙ্গে এই রোগের কী সম্পর্ক?
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে কারও যদি ডায়াবিটিস থাকে, তা হলে ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে কোলাজেন উৎপাদন কমে যায়। এই কোলাজেন নামক প্রোটিনটি সংযোগকারী টিস্যু গঠনে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে কোলাজেন সঙ্গে মিশে এক প্রকার আঠালো পদার্থ তৈরি হয়। এই পদার্থটি কাঁধের কাছে জমা হলে সেই অঞ্চলের পেশিগুলি শক্ত হয়ে যায়। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি কোন পথে?
সাধারণত কিছু সময় পর নিজে থেকেই কমে আসে এই সমস্যা। তবে নিজে থেকে না কমলে নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম মুক্তি দিতে পারে এই সমস্যা থেকে। ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকদের পরামর্শে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। কিছু বিরল ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় অস্ত্রোপচারের।