সচেতনতার অভাবই এই পর্যায়ের করোনা-স্ফীতির অন্যতম কারণ? ছবি: সংগৃহীত
শহর এবং রাজ্যের আনাচে কানাচে ক্রমশই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দৈনিক সংক্রমণের হারও বেশ উদ্বেগজনক। বিগত দু’বছরে তুলনায় এই পর্যায়ে করোনা কিছুটা হলেও কম আঘাত হানছে। সংক্রামিত হচ্ছেন প্রচুর মানুষ, দ্রুত ছড়াচ্ছেও। তবুও অন্ধকারে এইটুকু আশার আলো যে এই করোনা-স্ফীতিতে হাসপাতালগামী রোগীর সংখ্যা অনেক কম। মৃদু উপসর্গ নিয়ে মানুষ বাড়িতেই থাকছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ, বাড়াবাড়ি উপসর্গ না থাকলে বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকলেই চলবে। কিন্তু যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা কি আদৌ ‘মৃদু’ উপসর্গেই ভুগছেন? আনন্দবাজার অনলাইনের ‘ভরসা থাকুক’ ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিলেন চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায়।
অদ্রিজা বললেন, ‘‘আমরা চিকিৎসকরা আসলে ভীষণ নির্মম হই। অন্তত কোভিড আমাদের এরকম হতে বাধ্য করেছে। মৃত্যুর হার আর হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা দিয়ে আমাদের বিচার করতে হয় যে ভাইরাস কতটা সক্রিয় কাজ করছে। এ বারে মৃত্যুর হার আর হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাটা আগের তুলনামূলক ভাবে কম। ফলে ধরে নেওয়া যেতে পারে উপসর্গগুলিও কম সক্রিয়। তবে সবার ক্ষেত্রে সমস্যা একেবারে মৃদু নয়। তবে সেটা সংখ্যায় কম। এই পরিস্থিতিতে আরও জটিল করে তুলতে না চাইলে আমি সবাইকে বলব সচেতন থাকুন।’’
তা হলে কী সচেতনতার অভাবই এই পর্যায়ের করোনা-স্ফীতির অন্যতম কারণ?
অদ্রিজার উত্তর, ‘‘একটা ভাইরাসের নিজস্ব কেমিক্যাল স্ট্রাকচার আছে। শরীরে ঢুকে সে তার ক্রিয়া বিস্তার করতে থাকে। এর মাঝে সে চাইলে নিজের রূপ পরিবর্তন করতে পারে। আর একমাত্র মানব দেহেই ভাইরাস তার রূপ বদলাতে পারে। বাইরের পরিবেশে সে অকেজো। তবে তাদের এই মানবদেহে প্রবেশ করার পথ প্রশস্ত করছি আমরা নিজেরাই। এই ভাইরাসকে দমন করার একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক ব্যবহার করা। এই দুটো যদি না করি তা হলে এই লড়াইটা আমরা জিততে পারব না। এই বার যে হারলাম তার দায় শুধু ওই বড়দিনে পার্কষ্ট্রিটে মানুষের ঢল নয়। জনসমাবেশ, বাড়িতে বাড়িতে অবাধ জমায়েত এর কারণ। ফলে দায় আমাদের প্রত্যেকের। যেটা আমরা কেউ এড়িয়ে যেতে পারিনা।’’
শুধু কি জনসাধারণের দায়? রাষ্ট্রের কোনও দায়িত্ব নেই। অদ্রিজা মনে করেন, কোনও রোগের বিরুদ্ধে সচেনতার অভাব শুধু বন্দুক ধরে ভয় দেখিয়ে আনা সম্ভব নয়। প্রত্যেকে নিজের শরীর সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। এবং করোনা-পরিস্থিতির বাড়াবাড়ি হলে সেই দায় এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।