সকালে উঠে যে খাবার খান, সেই পদই কি রাতেও খাওয়া যাবে? ছবি: সংগৃহীত।
সারা দিন খেটেখুটে এসে কারই বা রান্না করতে ভাল লাগে? রাতে কী খাওয়া যায়, ভাবতে ভাবতেই সময় এগিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত খাবার সরবরাহ সংস্থার হাত ধরে ঘরে আসে লোভনীয়, কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাবার। তাতে জিভ তুষ্ট হলেও শরীরের ক্ষতি।
কিন্তু যদি সকালের জলখাবারের পদ রাতের পাতেও থাকে, তাতে কি কোনও ক্ষতি হয়? মানে, চিঁড়ের পোলাও, স্মুদি, স্যান্ডউইচ, খিচুড়ি -জাতীয় খাবার। এই সবই কিন্তু চট করে বানিয়ে ফেলা যায়। আবার সকালে বানিয়ে রাখলেও রাতে এসে খাওয়া যায়।
পুষ্টিবিদেরা বলেন, সকালের খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজের ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। সকালে যেমন পাতে পুষ্টিকর খাবার থাকা দরকার, রাতেও তাই। তেলে চপচপে লুচি, পরোটা, তরকারির চেয়ে তাই যে কোনও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া দিন হোক বা রাত, সব সময়েই ভাল।
কিন্তু তাই বলে সকালের জলখাবারের পদ!
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, সকালের খাবারের পদ রাতে থাকলেও কোনও সমস্যা নেই। উপমা, ওট্স প্যানকেক, দোসা, ডালিয়ার খিচুড়ি, রুটি, তরকারি, সবই রাতে খাওয়া যায়। তাঁর কথায়, অনেকেই রাতে পাউরুটি খেতে পছন্দ করেন। আবার সারা দিন কাজের পর এসে অনেকেরই রান্না করার ইচ্ছা থাকে না। সে ক্ষেত্রে ব্রাউন ব্রেডের সঙ্গে মুরগির মাংসের স্যুপ, ডাল, সব্জি খেতে পারেন। এ ছাড়া কিনোয়া, সব্জি, পনির দিয়ে পোলাওয়ের মতো করেও খাওয়া যায়। আসলে, সকালের খাবার বা রাতের খাবার বলে আলাদা করে কোনও বিষয় নেই। সারা দিনে কতটা খাওয়া হচ্ছে, পুষ্টির ভারসাম্য থাকছে কি না, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
সকালে রান্না করা খাবার রাতে খেলে কি সমস্যা হবে?
পুষ্টিবিদ বলছেন, রান্না করা খাবার যদি ফ্রিজে সংরক্ষণ করা থাকে, তা হলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে খাওয়ার আগে খাবারটি বেশ ভাল করে গরম করে নিতে হবে।
সকাল ও রাতের খাবারের পরিমাণ
পুষ্টিবিদরা সাধারণত সকালের খাবার পেট ভরে খেতে বলেন। আবার রাতে হালকা খাওয়ার পরামর্শ দেন। বিশেষত, রাতের দিকে অতিরিক্ত খেলে ঘুম, হজম— দুইয়েরই সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদের পরামর্শ, সকালের খাবার ও রাতের খাবার এক হলেও, পরিমাণটা বেশি-কম করে নিতে হবে। রাতে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে।
রাতের পাতে আর কী রাখা যায়?
শম্পা বলছেন, পুষ্টিকর সমস্ত কিছুই খাওয়া যায়। যাঁরা বয়স্ক, চিবোতে পারেন না, তাঁরা ভাত, খিচুড়ি খেতে পারেন। অম্বলের ধাত থাকলে সব্জি দিয়ে ভাত খেতে পারেন। এই সব খাবার এড়াতে চাইলে দুধ, খইও খাওয়া যায়। দুধ সহ্য না হলে খই, ছানাও খেতে পারেন। মুড়ি, চিঁড়ে খেলেও কোনও সমস্যা নেই। তবে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত দু’ঘণ্টা আগে খেয়ে নিতে হবে।