ঘুমের ঘাটতি বাড়ায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। প্রতীকী ছবি।
নিয়মিত শরীরচর্চা, সময়মতো খাওয়াদাওয়া করা সুস্থতার একমাত্র চাবিকাঠি নয়। শরীরের যত্ন নিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমোনো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক কর্মব্যস্ত জীবনে ঘুমের ঘাটতি লেগেই রয়েছে। চেষ্টা করেও পূরণ করে সম্ভব হচ্ছে না। আর এতেই বাড়ছে বিপদের ঝুঁকি। কম ঘুম হৃদ্রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে, তেমনটাই বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের করা একটি গবেষণাপত্র সে তথ্যই দিচ্ছে।
ঘুম কম হলে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা নিরূপণ করা এই গবেষণাটির বিষয় ছিল। তাতেই উঠে এসেছে এমন আশঙ্কা। কম ঘুম হলে রক্তচলাচলে বাধা পায়। তবে দু’-এক দিন ঘুমের ঘাটতিতে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কথা নয়। দীর্ঘ দিন ধরে এমন চলতে থাকলে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। সেই অবস্থাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয়, ‘এথেরোস্কেলেরেসিস’। ধমনীতে রক্ত প্রবাহে বাধা পাওয়া মানেই হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা তৈরি হতে শুরু হওয়া। এথেরোস্কেলেরেসিস পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তনালির দেওয়াল ঘন এবং পুরু হয়ে যায়। রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক গতি হারায়। শরীরের বাকি অংশে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছয় না। আর তাতেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
কম ঘুম হলে রক্তচলাচলে বাধা পায়। প্রতীকী ছবি।
২০১০ থেকে ২০১৩— এই তিন বছরে ৬৯ বছর বয়সি দু’হাজার জন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন শুধুমাত্র কম ঘুমের কারণে। এই তালিকাভুক্ত প্রত্যেকেই সারা দিনে ৩-৪ ঘণ্টার বেশি ঘুমোতেন না। অনেক দিন ধরে এই অভ্যাসের ফলে হৃদ্যন্ত্রে সরাসরি প্রভাব পড়েছে। বয়স বাড়তেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সমস্যা। ২০২০ সালে ‘আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিয়োলজি’-র করা একটি গবেষণাও একই তথ্য জানাচ্ছে।কাজ থাকবে। সেই সঙ্গে ব্যস্ততাও থাকবে। তাই বলে শরীরের প্রতি অবহেলা করা চলবে না। ‘সেন্টার অফ ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ অনুসারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমোনো অবশ্যই জরুরি বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।