Intermittent Fasting

সঠিক নিয়ম না মেনেই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’? শরীরের কী ক্ষতি হতে পারে এর ফলে

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হল দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় উপোস করে থাকা। শরীরেরে চাহিদা বুঝে উপোসের সময়কাল ১০ থেকে ১৮ ঘণ্টা এমনকি, ২২ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। তবে শরীরভেদে চাহিদা ভিন্ন হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২২ ১৬:১২
Share:

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হল দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে উপোস করে থাকা। ছবি: শাটারস্টক।

ওজন বাগে রাখার জন্য কেবল শরীরচর্চা করলেই চলবে না। তার সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসেও রাশ টানতে হবে। চটজলদি ওজন ঝরাতে ইদানীং ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ ডায়েট বেশ জনপ্রিয়। এই বিশেষ ডায়েটে খাবারের ক্ষেত্রে তেমন কড়া বিধিনিষেধ থাকে না। তাই তরুণ প্রজন্ম আরও অনেক বেশি এই ডায়েটের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। এই ডায়েটের ক্ষেত্রে দিনে ছয় থেকে আট ঘণ্টার মধ্যেই শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার খেয়ে ফেলতে হয়। আর বাকি সময়টা অর্থাৎ, ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা উপোস করেই কাটাতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার খেলে বিপাকহার নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে ক্যালোরিও কম যায় শরীরে। এই ডায়েটের ফলে মেদ ঝরে দ্রুত।

Advertisement

পুষ্টিবিদদের মতে, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং হল দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে উপোস করে থাকা। শরীরের চাহিদা বুঝে উপোসের সময়কাল ১০ থেকে ১৮ ঘণ্টা এমনকি, ২২ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত রাতের খাবারের পর থেকে পরের দিন প্রাতঃরাশ বা মধ্যাহ্নভোজন শুরু করার মধ্যে পুষ্টিবিদদের পরামর্শে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান রাখতে হবে।

নেটমাধ্যমের উপর ভরসা রেখে কোনও ডায়েটই করা উচিত নয়। এর ফলে শরীরে পুষ্টিগুণের অভাব হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের সময় পিছিয়ে যাওয়া, শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়া, চুল উঠে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো হাজার সমস্যা দেখা যায় নিয়ম মেনে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং না করলে। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ ছাড়া এই ডায়েট করলে নানা ভুলের কারণে ওজন তো কমবেই না বরং মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে শরীরের।

Advertisement

অনেকেই মনে করেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাওয়া সারতে পারলেই বুঝি এই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করা হয়। ছবি: শাটারস্টক

মহিলারা এই ডায়েট মেনে চলার সময় কী কী ভুল করেন?

১) এই ডায়েটে খুব বেশি খাদ্যের উপর বিধিনিষেধ থাকে না। তাই বলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে কখনওই আপনার ওজন কমবে না। এ ক্ষেত্রেও কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস মেনে চলতে হবে। এই ডায়েট চলাকালীন প্রচুর শাকসব্জি, মাছ-মাংস এবং প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তবে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়। আপনি যতটা পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করছেন, সেই পরিমাণ ক্যালোরি খরচ হচ্ছে কি না, সেটাও লক্ষ্য করতে হবে।

২) অনেকেই মনে করেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাওয়া সারতে পারলেই বুঝি এই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করা হয়। এই ডায়েট কিন্তু অনেক ধরনের হয়। এই ডায়েট করার সময়ে পুষ্টিবিদরা অনেককেই দিনে কেবল এক বার খাওয়ার পরামর্শ দেন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার ঠিক কত ঘণ্টা অন্তর কতটা পরিমাণ খাবার খাবেন, তা-ও বেঁধে দেওয়া হয়। কারও ক্ষেত্রে ১৪ ঘণ্টা উপোস করলে বেশি লাভ হবে, কারও আবার ১৬ ঘণ্টা! তাই আপনার শরীরের জন্য ঠিক কোন প্রকার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের প্রয়োজন, তা পুষ্টিবিদদের কাছে জেনে নেওয়াই শ্রেয়। নইলে লাভের লাভ কিছুই হবে না।

৩) যে কোনও ডায়েট করলে শুরুর দিকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। এই সমস্যার জেরে অনেকেই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ দীর্ঘ দিন চালিয়ে যেতে পারেন না। ফলে ওজন ঝরানোর স্বপ্ন অধরাই থাকে যায়। এই সমস্যা এড়াতে প্রচুর জল খেতে হবে আর ডায়েটে যেন পর্যাপ্ত মাত্রায় ফাইবার থকে সে দিকে নজর রাখতে হবে। দীর্ঘ ক্ষণ উপোস করলে অনেকের অ্যাসিডিটি, মাথাব্যথার মতো সমস্যা হয়। রক্তে শর্করার মাত্রাও বেড়ে যায়। তাই ডায়েট করার সময়ে নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement