Bank Scams

ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা বাড়ছে, সুরক্ষিত থাকবেন কী ভাবে জেনে নিন

কখনও কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে, আবার কখনও নিজেদের নামী কোনও ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মী হিসাবে জানিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। কী ভাবে বুঝবেন, জালিয়াতের খপ্পরে পড়েছেন?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৩
Share:

ব্যাঙ্ক ঋণ সংক্রান্ত প্রতারণা থেকে বাঁচার কিছু উপায় জেনে রাখুন। —প্রতীকী ছবি।

ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিচ্ছে প্রতারকেরা। দেশের নানা জায়গায় এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। প্রথমে ফোনে কথা বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তার পর ধাপে ধাপে তাঁদের দিয়ে কোনও নির্দিষ্ট অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে বা অনলাইনে কাগজপত্র জমা দিয়ে বিনা শর্তে দ্রুত বড় অঙ্কের টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। সেই ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। কখনও কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে, আবার কখনও নিজেদের নামী কোনও ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মী হিসাবে জানিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। কী ভাবে বুঝবেন, জালিয়াতের খপ্পরে পড়েছেন?

Advertisement

আইনজীবী রাজর্ষি রায়চৌধুরী সাইবার আইন নিয়ে কাজ করেন। তিনি বলেছেন, ব্যাঙ্ক ঋণ সংক্রান্ত প্রতারণা থেকে বাঁচতে কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতেই হবে। সাধারণ মানুষ কিছু জিনিস নজর করেন না, সেখানেই ভুলটা হয়ে যায়।

১) ব্যাঙ্কের কর্মী সেজে ফোন করে কেউ যদি কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করার লিঙ্ক পাঠায়, তা হলে আগে দেখে নিন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে তেমন কোনও অ্যাপ আছে কি না। যদি ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাওয়া হয়, তা হলে কখনওই তা দেবেন না। ঋণ নিতে হলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে গিয়েই আবেদন করুন।

Advertisement

২) ফোনে, অ্যাপে বা অনলাইনে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, পিন নম্বর, ওটিপি বা আধার নম্বর অথবা প্যান কখনওই শেয়ার করবেন না। ব্যাঙ্ক বা ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কখনওই ফোনে বা মেসেজে এই সব তথ্য জানতে চায় না।

৩) অজানা বা সন্দেহজনক ইমেল, লিঙ্ক বা ওয়েবসাইটে ক্লিক করবেন না। সন্দেহজনক মেসেজে ক্লিক করে কোনও রকম অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না। কারণ, এর থেকেই অজান্তে ম্যালঅয়্যার ডাউনলোড হয়ে যায় ডিভাইসে।

৪) ফোনে কেউ যদি কোনও ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দেয়, তা হলে আগে জেনে নিন সেই সংস্থার বৈধতা আছে কি না। অনেক সময়েই নামী সংস্থার ভুয়ো লোগো তৈরি করে বা নকল ইমেল আইডি বানিয়ে প্রতারণা করা হয়। তাই সতর্ক থাকুন। সেই সংস্থার বৈধ ওয়েবসাইটে গিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন।

৫) ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে ফোন এলে আগে সেই ব্যাঙ্কে ফোন করে খবর নিন। দ্রুত বড় অঙ্কের টাকা বিনা শর্তে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখালে তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভুয়ো হয়। এমন কোনও সুবিধা ব্যাঙ্ক দিচ্ছে কি না, তা আগে জানার চেষ্টা করুন।

৬) ব্যাঙ্কের নিজস্ব ও অনুমোদিত অ্যাপ বা ওয়েবসাইট থেকেই লেনদেন করুন। পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে টাকাপয়সার লেনদেন করবেন না। সব সময়ে ফোনে বা ডিভাইসে আপডেটেড সফ্‌টঅয়্যার ও অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করবেন।

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও লুকিয়ে বিপদ

রাজর্ষি জানালেন, হোয়াট্‌সঅ্যাপের ‘অটো ডাউনলোড’ অপশনটি আগে বন্ধ করুন। কারণ হোয়াট্‌সঅ্যাপের এই ফিচারের সুবিধা নিয়েই ফোনে এপিকে ফাইল পাঠাচ্ছে প্রতারকেরা। বিভিন্ন গ্রুপে আসা মেসেজ, ছবি বা ভিডিয়োর আড়ালেই থাকছে সেই সব ফাইল। আসলে এগুলি ম্যালঅয়্যার। ডাউনলোড করলেই আপনার ফোন বা ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ প্রতারকদের হাতে চলে যাবে। আর অজান্তেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য লোপাট হয়ে যাবে। আপনার ডিভাইস থেকেই ওটিপি অথবা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের নম্বর জেনে নিয়ে আপনার ব্যাঙ্ক থেকেই বড় অঙ্কের টাকা ঋণ নিয়ে নেবে প্রতারকেরা। আর যে হেতু আপনার ডিভাইসেরই ওটিপি ব্যবহার করা হয়েছে, তাই ব্যাঙ্কও এই লেনদেনকে বৈধ বলেই মনে করবে। ফলে এক দিকে যেমন গ্রাহক বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়বেন, তেমনই সমস্যায় পড়বে ব্যাঙ্কও। তাই সেটিংস অপশনে গিয়ে ফিচারটি বন্ধ করে রাখাই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement