ইদানীং আমরা খিদে পেলে খাই না, বরং কাজের ফাঁকে সময় পেলে তবে খাই! ছবি: সংগৃহীত
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস হওয়া উচিত উল্টো পিরামিড সিস্টেম অনুসারে। অর্থাৎ সকালের জলখাবার হবে সবচেয়ে ভারী। তার পর সময় অনুযায়ী কমবে খাওয়ার পরিমাণও। কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনযাত্রা ও পেশার তাগিদে আমরা এই নিয়ম মেনে চলতে পারি না। ইদানীং আমরা খিদে পেলে খাই না, বরং কাজের ফাঁকে সময় পেলে তবে খাই!
শরীর সুস্থ রাখতে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম করা কিন্তু মোটেই ভাল নয়। খালি পেটে থাকবেন না ভুলেও। না খেলে শরীরের বিপাক হার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অল্প অল্প করে খাবার খেতেই হবে। সারা দিন খালি পেটে থেকে রাতে অনেকটা ভারী একসঙ্গে খেয়ে ফেলেন অনেকেই। একসঙ্গে অনেকটা ভারী খাবার খেলে কিন্তু ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
১) জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে: জল খাওয়ার ফলে শুধু আমাদের তেষ্টাই মেটে না, শরীরের অঙ্গগুলিকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করতেও জলের ভূমিকা অনেকটা। শরীরে জলের ঘাটতি হলেই মুশকিল! ত্বকের সমস্যা, পেটের সমস্যা, চুল পড়ার সমস্যা, পর্যাপ্ত ঘুম বা মেদ ঝরানো— সব ধরনের সমস্যার একটাই সমাধান। আপনার ওজন ও উচ্চতার অনুযায়ী যতটা প্রয়োজন, তত পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শ চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ সকলেই দিয়ে থাকেন।
২) প্রাতরাশ এড়িয়ে যাওয়া চলবে না: ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়ে গেল বলে প্রাতরাশ না করেই কাজে বেরিয়ে পড়ছেন? অথবা ভাবছেন দিনটা শুরু করবেন, দুপুরের খাওয়া থেকেই! অনেকেই ভাবেন এই অভ্যাসেই মেদ ঝরবে। এটা কিন্তু একদম ভুল ভাবনা। প্রাতরাশে সাধারণত আমরা ডিম, দুধ, ফল, বাদাম, সিরিয়াল জাতীয় খাবার খাই। তাই এগুলি বাদ দিলে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন সি, ফাইবার, অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি বাদ পড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
প্রতীকী ছবি
৩) তাড়াহুড়ো করে খাবেন না: খাবার সময় এই ভুল একেবারেই করা উচিত নয়। খাবার ঠিক করে চিবিয়ে না খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে খাবারের সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণও শরীর গ্রহণ করতে পারে না। খাবারের মধ্যে থাকা অধিকাংশ ভিটামিনেরই অপচয় হয়। খাবার যত চিবিয়ে খাবেন, ততই এটি ভাঙবে এবং লালারসের সঙ্গে মিশবে। লালারসে থাকা উৎসেচকগুলি খাবারে মধ্যে থাকা ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলে। ফলে পেটে কোনও প্রকার সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
৪) বাড়িতে তৈরি খাবার বেশি করে খান: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা জটিল রোগ বাসা বাঁধে। রেস্তরাঁর খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভাল। রেস্তরাঁর খাবারে তেল মশলার পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই রেস্তরাঁর খাবার আগে থেকেই বানিয়ে রাখা হয়। আপনি অর্ডার করার পর শুধু গরম করেই পরিবেশন করা হয় সেই খাবার। বাসি খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তা ছাড়া পেটের সমস্যা হতে পারে। দিনের পর দিন রেস্তরাঁর খাবার খেলে কোলেস্টেরল ও হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়ে। মিষ্টি জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় যত কম রাখবেন ততই ভাল।
৫) রাতের খাবার তাড়াতাড়ি করে ফেলতে হবে: অনেকেই রাতে দেরি করে খাবার খান। আর খাবার খেয়েই বিছানায় গড়িয়ে পড়েন। সুস্থ থাকতে হলে এই অভ্যাসেও অবিলম্বে বদল আনুন। খাওয়ার পর দু’ থেকে তিন ঘণ্টা পর শুতে যান। শরীরকে খাবার হজম করার সময় দিতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এই টোটকা মেনে চলুন।