কেবল শরীরের নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতেও এই অভ্যাসটি দারুণ কার্যকর। ছবি: সংগৃহীত
সাইকেল চালাতে ভালবাসেন? সপ্তাহে দু’-তিন দিন সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন নিউ টানের রাস্তায়? কেউ শখে কেউ বা আবার কাজের প্রয়োজনেই রোজ সাইকেল চালাতে বাধ্য হন। কিন্তু সাইকেল চালানো শরীরের উপর কেমন প্রভাব ফেলে জানেন কি?
শরীরের মেদ ঝরাতে ভারী শরীরচর্চা থেকে শুরু করে হরেক রকম ডায়েট, কিছুই বাদ রাখি না আমরা। নিয়মিত কেবল সাইকেল চালিয়েই কিন্তু ওজন ঝরানো সম্ভব! ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, রোজ নিয়ম করে আধ ঘণ্টা তীব্র গতিতে সাইকেল চালালে বিপাকহার অত্যন্ত বেড়ে যায়। ক্যালোরির খরচ বেশি হয়। ফলে শরীরের মেদ ঝরতেও সময় লাগে না।
চিকিৎসকরা বলেন, সাইকেল চালানো খুব ভাল একটি শরীরচর্চা। এই অভ্যাস রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ফলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা কমে এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালনও ভাল হয়। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, নিয়মিত সাইকেল চালালে ক্যানসারের মতো মারণ রোগের ঝুঁকিও অনেকটা কমে যায়।
প্রতীকী ছবি
কেবল শরীরের নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতেও এই অভ্যাসটি দারুণ কার্যকর। অল্প বয়স থেকেই ইদানীং মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছে মানুষ। করোনার থাবায় প্রায় দু’টি বছর আমরা গৃহবন্দি ছিলাম। একাকিত্ব, মানসিক চাপ, উদ্বেগ— যেন কমবেশি সবাইকে ঘিরে ধরেছে। নিয়মিত সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তুললে মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি সম্ভব। কলকাতা শহরে বেশ কয়েকটি সাইক্লিং ক্লাব আছে, এমন একটি ক্লাবের সদস্য হয়ে গেলেও মন্দ হয় না! নতুন লোকেদের সঙ্গে মেলামেশা করলে আপনার মন-মেজাজ ভাল থাকবে, আর শরীরচর্চাও করা হবে।
কলকাতাবাসীর কাছে কি গত কয়েক বছরে সাইকেলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে?
বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের এক সাইকেল দোকানের কর্ণধার আশিসকুমার গুপ্তর মতে, ইদানীং তাঁদের দোকানে সাইকেলের বিক্রি ভালই বেড়েছে। কেবল শিশুরাই নয়, ৩০-৪০ বছর বয়সিদের মধ্যেও সাইকেল কেনার চাহিদা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘লোকে এখন বেশ স্বাস্থ্য সচেতন। তাই সবচেয়ে বেশি চাহিদা গিয়ার্ড সাইকেলের। মাউন্টেন গিয়ার্ড সাইকেলেরও বিক্রি ভালই। পেট্রোপণ্যের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে ইলেকট্রিক সাইকেলের রমরমাও বেশ বাড়ছে।’’
সাইকেল ব্যবসায়ী কিষান গুপ্তর মত আবার ভিন্ন। তিনি মনে করেন, কলকাতায় বড়দের মধ্যে সাইকেল কেনার আগ্রহ তেমন চোখে পড়ে না। ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সি ক্রেতাদের সংখ্যাই বেশি। সামনেই গরমের ছুটি পড়বে, তখন শিশুদের মধ্যে সাইকেল কেনার চাহিদা আরও বাড়বে।
শরীর নিয়ে একটু বেশি সচেতন হলে ক্ষতি কী? আজ ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’-এ শরীরের প্রতি আর একটু বেশি যত্ন নেওয়ার পরিকল্পনা করা যেতেই পারে। সাইকেল চালাতে জানলে তাতে চড়েই বেরিয়ে পড়ুন শহরের অলিগলিতে। শরীর ও মনকে চাঙ্গা রাখার ক্ষেত্রে এর মতো অভ্যাস কমই আছে।