বাড়তি মেদের জন্য শারীরিক নানা রকম জটিলতাও দেখা দিতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
বহু চেষ্টা করেও সন্তান-সুখ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন? নানা রকম চিকিৎসার পরও ইতিবাচক কিছু না ঘটায় মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন অনেকে। চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক বিশেষ কোনও জটিলতা না থাকলেও সামান্য একটি কারণ কিন্তু গর্ভধারণে বাধা দিতে পারে। তা হল দেহের বাড়তি ওজন। তাই সন্তানধারণের পরিকল্পনা করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গেলে প্রথমেই তাঁরা বলে থাকেন, দেহের স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখতে হবে। কিন্তু সন্তান আসার আনন্দে এবং ভ্রূণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে অনেক সময়েই হবু মায়েদের বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। আবার নিয়মিত শরীরচর্চার অভাবেও মেদ বাড়তে পারে। এই মেদই কিন্তু শরীরের বিভিন্ন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে। যা সন্তানধারণে বাধা দেয়। এ ছাড়াও এই বাড়তি মেদের জন্য শারীরিক নানা রকম জটিলতাও দেখা দিতে পারে। তা হবু মা এবং ভ্রূণের ক্ষতি করতে পারে।
স্থূলত্ব কী ভাবে সন্তানধারণের সুখ থেকে বঞ্চিত করে?
১) হাইপারটেনশন
দেহের বাড়তি ওজনের ফলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। যা সন্তানধারণের একেবারে প্রথম পর্যায়ে ভ্রূণের জন্য সাঙ্ঘাতিক হয়ে উঠতে পারে। আবার সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
২) ম্যাক্রোসমিয়া
অনেক সময়েই দেখা যায়, গর্ভস্থ ভ্রূণটি স্বাভাবিকের চেয়ে আকারে বড়। তাই প্রসবের সময়ে স্বাভাবিক ভাবেই সতর্ক থাকতে হয়। এই ভয় দ্বিগুণ হয়ে যায় যদি মায়ের দেহের ওজন বেশি হয়। কারণ, স্বাভাবিক ভাবে প্রসবের সময়ে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় দু’জনেরই প্রাণের ঝুঁকি থাকে।
৩) ডায়াবিটিস
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। যা প্রসবের পর আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে। কিন্তু সন্তানধারণ করতে চান এমন স্থূলকায় মহিলার রক্তে এই শর্করার পরিমাণ যদি বেশি থাকে, তা হলে মা হওয়ার পথটি নিঃসন্দেহে জটিল হয়ে যায়।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। প্রতীকী ছবি।
৪) স্লিপ অ্যাপনিয়া
ঘুমের মধ্যে হঠাৎই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় অনেকের। কিছু ক্ষণ পর আবার নিজে থেকেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানান, এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণই হল অতিরিক্ত ওজন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এমন লক্ষণ দেখা দিলে হবু মা এবং ভ্রূণ দু’জনেরই ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
৫) জন্মগত ক্রটি
হবু মায়ের অতিরিক্ত ওজন গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্ষতি করতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, জন্মের সময়ে শরীরে কোনও ত্রুটি নিয়ে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুদের মায়েদের ওজন সে সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল।