তাড়াতাড়ি খাবার খেলে কী ক্ষতি হতে পারে? ফাইল চিত্র।
অফিসে যাওয়ার তাড়ায় নাকেমুখে গুঁজেই ছুটলেন। কাজের জায়গাতেও দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদে খাওয়ার সময়টা ১০ মিনিটেই বেঁধে দিলেন। তার মধ্যেই কোনও রকমে খাবার অর্ধেক চিবিয়ে, অর্ধেক গিলে খেয়ে ফেললেই হল। অনেককেই দেখবেন, খুব তাড়াতাড়ি খাবার খেতে। যত ক্ষণে আপনি পাত পেড়ে গুছিয়ে বসলেন, তত ক্ষণে হয়তো তাঁদের খাওয়া শেষ। এমন তাড়াহুড়ো করে খাওয়া কি ভাল? কেন্দ্রের অধীনস্থ ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা শরীরের ক্ষতি করে নানা ভাবে।
তাড়াতাড়ি খাওয়ার অভ্যাস কী ভাবে শরীরে প্রভাব ফেলে?
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, তাড়াতাড়ি খেলে রক্তে ইনসুলিনের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। ডায়াবিটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। সাধারণত খাবার যখন চিবিয়ে খাওয়া হয়, তখন তা ছোট ছোট টুকরোয় ভেঙে লালারসে মিশে গিয়ে পৌঁছয় পাকস্থলীতে। লালারসের অ্যামাইলেজ় উৎসেচক কার্বোহাইড্রেট বিপাকে সাহায্য করে। কিন্তু তাড়াহুড়োয় যদি খাবার চিবিয়ে না খাওয়া হয়, তা হলে খাবারের বড় বড় টুকরো গিয়ে পৌঁছয় পাকস্থলীতে। তখন অ্যামাইলেজ় ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তা ছাড়া পাকস্থলীতে গিয়ে সেই খাবার পাচিতও হতে পারে না। ফলে খাবারের পুষ্টিরসের ঠিকমতো শোষণ হয় না। এতে এক দিকে যেমন পুষ্টির ঘাটতি থেকে যায়, তেমনই পাচিত না হওয়া খাবার মেদ হিসেবে জমতে শুরু করে কোষে কোষে। যা ওজন বাড়ায় এবং রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও বাড়ায়।
তাড়াতাড়ি খাবার খেলে হরমোনের ভারসাম্যও বিগড়ে যেতে পারে। লেপটিন হরমোন খাবারের বিপাকে বড় ভূমিকা নেয়। ধীরে ধীরে খাবার খেলে সেই হরমোনের ক্ষরণ অনেকটা সময় ধরে হয়, ফলে খাবার ঠিকমতো হজম হয়। এর উল্টোটা হলেই বদহজমের সমস্যা দেখা দেয়, গ্যাস-অম্বলে ভোগান্তিও বাড়ে। ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’-এর সমস্যা শুরু হয় যাতে ওজন বাড়তে থাকে। পেট-কোমরে মেদও জমতে শুরু করে। তাই খাবার ধীরেসুস্থে চিবিয়ে খাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা।