ঋতুস্রাব নিয়মিত করার প্রয়োজন প্রত্যেক মেয়ের ক্ষেত্রেই। ছবি: সংগৃহীত
সাধারণত ২৮ থেকে ৩০ দিন পরপর মেয়েদের ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৩০-৩৫ দিনও হতে পারে। তবে তার বেশি দেরি হলেই সেটাকে অনিয়মিত বলা যেতে পারে। অনেকের দু’-তিন মাসে একবার হয়। আবার অনেকে আরও দেরি করে। অনেক দিন পর ঋতুস্রাব হলে বহু মেয়ের নানা রকম শারীরিক সমস্যা হয়। যেমন ৪-৫ দিনের বদলে ৭ দিনেরও বেশি রক্তক্ষয় হতে পারে। তলপেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা বা পেটের পেশিতে টান লাগতে পারে। বমির প্রবণতাও বেড়ে যেতে পারে। তাই ঋতুস্রাব নিয়মিত করার প্রয়োজন প্রত্যেক মেয়ের ক্ষেত্রেই।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের অনেক কারণ থাকতে পারে। হঠাৎ খুব ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম, জরায়ুতে সমস্যা কিংবা আরও জটিল কোনও শারীরিক সমস্যা। তাই অনিয়মিত ঋতুস্রাব হলে তার সঠিক কারণ জানার জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু উপায়েও ঋতুস্রাব নিয়মিত করার সুযোগ থাকে। সেগুলি জেনে নিন।
১। যোগাভ্যাস
২০১৩ সালে ১২৬ জন মহিলার উপর করা এক সমীক্ষা বলছে, সপ্তাহে ৬ দিন যদি ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট যোগাভ্যাস করা যায়, তা হলে মেয়েদের ঋতুস্রাবের নানা রকম সমস্যা কমে যেতে পারে। ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা, উদ্বেগ এবং মেয়েদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেই যোগাভ্যাস উপকারী বলে জানা গিয়েছে।
২। শরীরচর্চা
যোগাভ্যাসের বদলে নিয়মিত শরীরচর্চা করলেও ঋতুস্রাব নিয়মিত হতে সুবিধা হয়। আধুনিক জীবন অনেক বেশি বসে-বসে কাজের দিকে এগিয়ে দিচ্ছে মেয়েদের। তাই কায়িক পরিশ্রম, অল্প হাঁটাচলা, সিঁড়িভাঙার মতো কিছু রোজের কাজ বেশি করে করলেও ঋতুস্রাব নিয়মিত হতে পারে।
৩। ওজন নিয়ন্ত্রণ
উচ্চতা অনুযায়ী যেমন ওজন হওয়া বাঞ্ছনীয়, তার চেয়ে খুব বেশি ওজন বেড়ে গেলেও ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়ে যায়। তাই স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, ফাস্ট ফুডের বদলে পুষ্টিকর খাবার আর ফল-সব্জি বেছে নিন। খুব বেশি নুন-চিনি রোজের খাবারে না রাখাই ভাল। ওজন যাতে বেড়ে না যায়, সে দিকে নজর রাখতে হবে।
৪। আদা
আদা ব্যবহার করে ঋতুস্রাবকালীন নানা সমস্যার সমাধান করা অতি প্রাচীন টোটকা। বৈজ্ঞানিক ভাবে এর যদিও কোনও যোগ পাওয়া যায়নি, তা-ও দেখা গিয়েছে ঋতুস্রাবের সময়ে অতিরিক্ত যন্ত্রণা বা অতিরিক্ত রক্তক্ষয় থেকে মুক্তি পেতে আদা কাজে লাগতে পারে। তাই রোজের খাবারে আদা রাখার পরামর্শ দেন অনেকেই।
৫। দারচিনি
ঘরোয়া টোটকার মধ্যে দারচিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। বহু গবেষণায় দেখা গিয়েছে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে দারচিনি উপকারী। পেটে ব্যথা, বমির প্রবণতা এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষয় সামলাতেও দারচিনি কার্যকর।
পেটে ব্যথা, বমির প্রবণতা এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষয় সামলাতেও দারচিনি কার্যকর।
৬। অ্যাপ্ল সাইডার ভিনিগার
২০১৩ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রত্যেক দিন অ্যাপ্ল সাইডার ভিনিগার খেলে মেয়েদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব এবং প্রজনন ক্ষমতায় উপকার পাওয়া যেতে পারে।
৭। ভিটামিন
ভিটামিন ডি এবং বি-র ভিটামিন ঘাটতি হলেও নানা মেয়েদের ঋতুস্রাবের সমস্যা হতে পারে। তাই খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে শরীরে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন না যায়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অবশ্যই ভিটামিনের ওষুধ খেতে হবে।