অনেকেই পেটের চর্বি বেড়ে যাওয়ার সমস্যায় নিয়মিত ভুক্তভোগী
অধিকাংশ স্বাস্থ্য সচেতন মানুষই সচেতন থাকেন দেহের ওজন যাতে না বাড়ে। এর জন্য পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়া, ব্যায়াম ইত্যাদির শরণাপন্ন হলেই সমস্যা মিটে যাবে বলে মনে করা হয়। তবুও অনেকেই পেটের চর্বি বেড়ে যাওয়ার সমস্যায় নিয়মিত ভুক্তভোগী। বিশেষজ্ঞরা এই প্রসঙ্গে বলেন, কিছু নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যকর খাদ্য বিপাককে ধীর করার জন্য দায়ী। অনেকেই বসে বসে জল পান করেন, যাতে পেটে চর্বি না জমে। ইন্টারনেটেও স্বাস্থ্য এবং ওজন কমানোর জন্য নানা পরামর্শ দেওয়া হয়, যা অন্ধের মতো অনুসরণ করেন অনেকেই। কিন্তু এই সব স্বাস্থ্যকর উপায় কতটা ফলদায়ী, তা নিয়ে মাথা ঘামান না প্রায় কেউই। ফলে স্বাস্থ্যরক্ষার উপায়ই পেটে চর্বি জমার কারণ হয়ে দাঁড়ায় কখনও কখনও।
১। সুস্থ থাকতে আমরা ব্যায়াম, যোগাসন বা সাঁতারের পিছনে অনেকখানি সময় ব্যয় করি। জিমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে সুঠাম শরীর পাওয়ার চেষ্টা করেন পৃথিবীর বহু মানুষ। কিন্তু তা করতে গিয়ে আপনি যদি আপনার ন্যূনতম সাত ঘণ্টার ঘুমের সঙ্গে আপস করেন, তাহলে তা হবে শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্লান্তি জমতে থাকলে পেটে চর্বিও জমবে একটু একটু করে। কারণ, ঘুমের সময় যে বিপাক প্রক্রিয়া আমাদের খাদ্যকে শরীরের প্রয়োজনিত শক্তিতে পরিণত করে তার সময় কমে যাবে। ঘুমের অভাব ওজন বৃদ্ধির জন্যও তাই পরোক্ষে দায়ী।
ডিমকে প্রোটিনের অন্যতম উত্স হিসাবে বিবেচনা করা হয়
২। যদিও খুব কম ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তবে খুব বেশি ঘুমও কিন্তু ভাল নয়। ঘুমের সময় আট ঘণ্টার বেশি হতে থাকলে হৃদরোগ, ডায়াবিটিস এমনকি স্থূলতার ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে। পেটে চর্বি জমেছে, এমন মানুষদের উপর করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে দিনের অনেকখানি সময় ঘুমিয়ে কাটান এঁরা। প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম শরীরের জন্য যথেষ্ট এবং এর বেশি হওয়া উচিত নয়। এটি বিপাককেও প্রভাবিত করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
৩। নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা মেনে খাওয়াদাওয়া করেন এমন মানুষজন প্রায়শই শর্করাযুক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন, যা তাঁদের তালিকায় নিষিদ্ধ। ক্যালোরি বাদ দিয়ে শুধু স্বাদের জন্য এঁরা কম চর্বিযুক্ত এবং সরাসরি চিনি নেই, এমন খাবারের শরণাপন্ন হন। স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসাবে বাজারে প্রচলিত হলেও কখনও কখনও এই খাবারগুলিতে প্রিজারভেটিভ এবং কৃত্রিম মিষ্টি থাকতে পারে, যা ওজন কমানোর প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে পারে। ফলে পেটের চর্বি জমার জন্য দায়ী হতে পারে শর্করাবিহীন এই মিষ্টি খাবার।
৪। খাদ্যতালিকায় প্রোটিন যোগ করাকে ওজন কমানোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হয়। ওজন কমানোর জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় বেশি প্রোটিন এবং কম ফ্যাট থাকা অত্যাবশ্যক। ডিমকে প্রোটিনের অন্যতম উত্স হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং আমরা ডিমে উপস্থিত চর্বি থেকে মুক্তি পেতে কুসুম বাদ দিয়ে দিই। তবে এটি কিন্তু কুসুমে উপস্থিত ভিটামিন এবং কোলিনের থেকেও আমাদের বঞ্চিত করে। অভাব হয় ভিটামিন ডি-এরও। আর শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত। ফলে কুসুম বাদ দিয়ে ডিম খেতে থাকলেও পেটে চর্বি জমা অবশ্যম্ভাবী।